—ফাইল চিত্র।
হাওড়া শহরাঞ্চলে টোটো তুলে দিয়ে এ বার নির্দিষ্ট কিছু রুটে ই-রিকশা চালানোর সিদ্ধান্ত নিল হাওড়া জেলা প্রশাসন। ঠিক হয়েছে, হাওড়া পুরসভা এলাকার ৮০টি রুটে আট হাজারের কিছু বেশি ই-রিকশাকে অনুমোদন দেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে লাইসেন্স পাবে পাঁচ হাজার ই-রিকশা। টোটোর পরিবর্তে যাঁরা ই-রিকশা চালাতে আগ্রহ প্রকাশ করবেন, শুধু তাঁদেরই নির্দিষ্ট আবেদনের ভিত্তিতে যোগ্যতা বিচার করে লাইসেন্স দেওয়া হবে। চলতি মাসের শেষ দিক থেকে শুরু হবে এই প্রক্রিয়া।
রাজ্য সরকার টোটোকে অবৈধ ঘোষণা করে তার পরিবর্তে ই-রিকশা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল আগেই। কিন্তু অধিকাংশ জেলাতেই টোটোর রমরমা বন্ধ করা যায়নি। বরং তার সংখ্যা দিনদিন বেড়ে যাওয়ায় রাস্তায় বেড়েছে যানজট। হাঁটার জায়গা হয়ে গিয়েছে অপ্রতুল। হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, টোটো অবৈধ ঘোষিত হওয়ার আগেই হাওড়া শহরে গত তিন বছরে দু’দফায় লাইসেন্স (টেম্পোরারি আইডেন্টিফিকেশন নম্বর বা টিন) দেওয়া হয়েছিল প্রায় ১২ হাজার টোটোকে। এর মধ্যে পুরসভা দিয়েছিল প্রায় ছ’হাজার টোটোকে। আর বাকি ছ’হাজারকে দিয়েছিল হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট। তা সত্ত্বেও হাওড়া শহরে অবৈধ টোটোর সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রের খবর, হাওড়ার শহরাঞ্চলে টোটোর সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে তদন্ত করে দেখা গিয়েছে, এক-এক জন টোটোমালিকের নামে সর্বোচ্চ দু’টি ও সর্বাধিক ২০টি করে টোটোর লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এ ভাবেই আড়াই হাজার টোটোমালিকের নামে দেওয়া হয়েছে ছ’হাজারেরও বেশি লাইসেন্স। পুলিশের বক্তব্য, তিন চাকার এই পরিবেশবন্ধু যান নিয়ে রীতিমতো ব্যবসা ফেঁদেছেন কিছু লোক। তাই ঠিক হয়েছে, এক জন টোটো মালিক একটিই ই-রিকশার লাইসেন্স পাবেন ও তা দেওয়া হবে অনলাইনে, যাতে কেউ একাধিক লাইসেন্স বার করতে না পারেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া পুরসভা এলাকায় ১২ হাজার টোটোকে আগে লাইসেন্স দেওয়া হলেও এক জনের নামে একাধিক লাইসেন্স থাকায় ই-রিকশার জন্য শুধু আট হাজারের কিছু বেশি টোটোমালিককে লাইসেন্স দেওয়া হবে। এর জন্য আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর ৮০টি রুট নির্বাচিত করেছেন। যার মধ্যে ফোরশোর রোড, পঞ্চাননতলা রোড বা ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাসের মতো ব্যস্ত রাস্তাও রয়েছে। প্রতিটি রুটে ৫০টি করে লাইসেন্স দেওয়া হবে। যে সব রুটের জন্য বেশি আবেদন জমা পড়বে, সেই সব রুটে লটারির মাধ্যমে লাইসেন্স দেওয়া হবে।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঠিক হয়েছে, টোটো মালিকদের আবেদনপত্রের সঙ্গে ই-রিকশার স্বীকৃত সরকারি ডিলারদের স্বাক্ষরিত চুক্তিপত্রের প্রতিলিপি জমা দিতে হবে। কারণ, টোটোমালিকদের এক দিকে যেমন দেখাতে হবে, তাঁরা টোটোগুলিকে বাতিল হিসেবে ঘোষণা করেছেন, তেমনই ডিলারেরা যে ই-রিকশার দাম থেকে ওই বাতিল টোটোর দাম বাদ দিয়েছেন, তারও প্রমাণ দিতে হবে।’’
ওই পুলিশকর্তা জানান, ইতিমধ্যে হাওড়ায় টোটো তৈরির অধিকাংশ কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy