ব্যান্ডেল চার্চে বড়দিনের সকালে।—নিজস্ব চিত্র।
প্রতি বছর বছরের এই সময় বিশেষ করে ২৫ ডিসেম্বর ব্যান্ডেল চার্চ-সহ জেলার বিভিন্ন বিনোদন পার্কে ভিড় উপচে পড়ে পর্যটকদের। পর্যটকদের ভিড় হাসি ফোটায় ছোট ব্যবসায়ী থেকে হকার সকলের মুখেই। কিন্তু নোট বাতিল ও ব্যাঙ্কে টাকার টানাটানিতে বিধি বাম। যা থাবা বসিয়েছে বড়দিনের মানুষের নির্ভেজাল আনন্দ-উৎসবে।
তবে নোট-কাণ্ডের পাশাপাশি হুগলি ও নদিয়ার মধ্যে সংযোগকারী ঈশ্বরগুপ্ত সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়াকেও এর অন্যতম কারণ হিসাবে মনে করছেন অনেকে। কারণ গঙ্গা পেরিয়ে পাশের জেলার প্রচুর মানুষ হুগলিতে আসেন পিকনিক করতে। কিন্তু এ বার সেতুর কারণে সেই ভিড় নেই। হুগলির ব্যান্ডেল চার্চ, ইমামবাড়া, হংসেশ্বরী মন্দির, অ্যাকোয়ামেরিনা পার্ক, নিউদিঘা, ছুটি পার্ক, ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক সবগুলিতেই এ দিন পর্যটক অন্য বারের চেয়ে অনেক কম।
ওই সব পার্ক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, অন্যবারের তুলনায় এবছর পর্যটকের সংখ্যা অনেকটাই কম। তাঁদের আশঙ্কা, আগামী ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারিতেও একই ছবি দেখা যাবে। ফলে শীতের মরসুমে ব্যবসার ক্ষতি পূরণ করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। এক বাগান মালিকের কথায়, ‘‘ডিসেম্বরের শেষ ও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অন্য বছরে এই সময় বুকিং ফিরিয়ে দিতে হতো জায়গা না থাকার জন্য। কিন্তু এ বার বুকিংয়ে ভাটা। এমনকী ভাড়া কমিয়েও বুকিং আসছে না।’’
ভাটা পড়েছে খাবার দোকানের ব্যবসাতেও। চন্দননগর-চুঁচুড়ায় জিটি রোডের ধারে বহু দোকানিরই এক সুর, ‘এ বছর বড়দিনের ব্যবসায় মন্দা’। এক চায়ের দোকানি জানান, অন্য বছর এ দিন কত পিকনিক পার্টির বাস দোকানে চা খাবে বলে দাঁড়াত। এ বার তাতেও ভাটা। কলকাতার যাদবপুরের বাসিন্দা অনুসূয়া মজুমদার এসেছিলেন ব্যান্ডেল চার্চে। বললেন, ‘‘শীতের আমেজকে উপভোগ করতে প্রতি বছরই বড়দিন এবং ১ জানুয়ারি বাড়ির খাওয়া দাওয়া বন্ধ রেখে বাইরে বেরিয়ে পড়ি। কিন্তু এ বছর টাকার সমস্যায় সাধারণ মানুষ যে ভাবে বিপাকে পড়েছে তাতে আনন্দ ফুর্তি ভুলে যেতে হয়েছে। তবুও বাচ্চাদের আনন্দের জন্য সীমিত টাকার মধ্যেই ঘোরাঘুরি করতে হয়েছে।’’
চার্চের বাইরে ফুচকা বিক্রি করেন অমল দাস। তাঁর কথায়, ‘‘অন্য বছর যে পরিমাণ মাল তৈরি করে বিক্রির জন্য নিয়ে আসি এ বছরও তা করে মহা বিপদে পড়ে গিয়েছি। খদ্দেরের টান রয়েছে। ফলে ব্যবসা ভাল হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy