Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus

বৃষ্টিতে ধান-তিলের দফারফা হুগলিতে

রাজ্যের অন্যতম ধান উৎপাদক জেলা হুগলি। ঝড়বৃষ্টিতে চাষে ঠিক কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত নির্দিষ্ট ভাবে জানা যায়নি।

ক্ষতি: জমি থেকে জল বের করার চেষ্টা আরামবাগে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

ক্ষতি: জমি থেকে জল বের করার চেষ্টা আরামবাগে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া-উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২০ ০০:৩৯
Share: Save:

এ যেন গোদের উপরে বিষফোঁড়া!

একে করোনা জোর ধাক্কা দিয়েছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। তার উপরে সোমবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া ঝড়বৃষ্টিতে হুগলির বোরো চাষের দফারফা হয়েছে। নিকাশি যথাযথ না-থাকায় জলে ডুবেছে বহু ধানজমি। বহু ক্ষেতের ধানগাছ মাটিতে লেপ্টে গিয়েছে। বোরো ধান কেটে ঠিক ঘরে তোলার মুখেই এই বিপদ থেকে পরিত্রাণের উপায় ভেবে পাচ্ছেন না চাষিরা। ক্ষতি হয়েছে তিল এবং আনাজ চাষও।

রাজ্যের অন্যতম ধান উৎপাদক জেলা হুগলি। ঝড়বৃষ্টিতে চাষে ঠিক কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত নির্দিষ্ট ভাবে জানা যায়নি। জেলা কৃষি দফতর জানিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির হিসাব চলছে। জেলার কৃষি আধিকারিক অশোক তরফদার বলেন, “আরামবাগ মহকুমার নিচু জায়গা খানাকুল-১ ও ২ ব্লকে বেশি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছি আমরা। আবহাওয়া দফতর বলছে, শুক্রবার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। তাতে ক্ষতি আরও বাড়বে। রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হবে।”

চাষিদের আশঙ্কা, বৃষ্টির জল জমি থেকে দ্রুত না-নামলে ভিজে ধানে কল হয়ে গিয়ে পুরো চাষই নষ্ট হয়ে যাবে। এ ছাড়াও যে সব ধান এখনও কাটতে দেরি আছে, সেই সব ধানেরও ফুল ঝরে যাওয়ায় দানা পুষ্ট হবে না।

সোমবার সন্ধ্যা থেকে দফায় দফায় ঝড়বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হয় মঙ্গলবার সকালেও। সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া। দুপুরের পর থেকে বৃষ্টি থামলেও যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। ফলে, কতটা ধান তাঁরা ঘরে তুলতে পারবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন তাঁরা।

দিন কয়েক আগের শিলাবৃষ্টি এবং সোমবার রাতের ঝড়বৃষ্টিতে পান্ডুয়া ব্লকের পাইকারা এবং ছোটসরষা গ্রামের প্রায় ৪০০ বিঘা বোরো ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন চাষিরা। ছোটসরষা গ্রামের চাষি সুশান্ত কাঁড়ি বলেন, ‘‘পাকা ধান নষ্ট হয়ে গেল। কিছুই ঘরে তুলতে পারব না।’’ আর এক চাষির কথায়, ‘ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলাম। কী করে শোধ করব, ভেবে পাচ্ছি না। ব্লক কৃষি উন্নয়ন আধিকারিক গ্রামে এসে দেখে গিয়েছেন। তিনি সমস্যা গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন।’’

শুধু ধানই নয়, ঝড়বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে তিল এবং গ্রীষ্মকালীন আনাজ চাষেও। তিল চাষের জমি ডুবে থেকে গোড়া পচে যাবে বলে চাষিদের আশঙ্কা। ঝিঙে, করলা, কুমড়ো, পটল ইত্যাদি আনাজ মাচা ভেঙে জমিতে লুটিয়ে পড়েছে। জমির জল না নামলে বা শুকোলে বিভিন্ন শাকের গোড়া পচে নষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

তবে, এই বৃষ্টি হাওড়ার আমতা-২ ব্লকের চাষিদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। কারণ, জলসঙ্কট কিছুটা মিটেছে। বোরো চাষে দফায় দফায় জল লাগে। মুণ্ডেশ্বরী নদী সংস্কার হওয়ার জন্য ওই চাষিরা জলের সমস্যায় পড়েছিলেন। ফলে, বোরো, তিল ও বাদাম চাষের ক্ষতি হচ্ছিল। বৃষ্টি হওয়ায় বহু চাষি মঙ্গলবার সারের দোকানে লাইন দেন। সৌরভ রায় নামে এক বোরো চাষি বলেন, ‘‘জমি খটখটে হয়ে গিয়েছিল। জলের অভাব মিটেছে। আশা করি ক্ষতি পূরণ হয়ে যাবে।’’ একই কথা জানান তিল ও বাদাম চাষিরা।

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus Health Coronavirus Lockdown Farming
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy