পড়ে: মহিলা শৌচাগারের দরজা খুলে পড়ে আছে পাশে। বলরামবাটী স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র
জরুরি প্রয়োজনে হন্যে হয়ে শৌচাগার খুঁজছিলেন হরিপালের বাসিন্দা সুমা সাহা। ব্যক্তিগত কাজে তিনি এসেছিলেন উত্তরপাড়ায়। ভেবেছিলেন স্টেশনে গেলে সমস্যার সমাধান হতে পারে। অনেক খুঁজে যখন তিনি শৌচাগারের কাছে পৌঁছলেন দেখলেন তালা ঝুলছে ফাইবারের দরজায়।
সুমাদেবী একা নন। এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে অনেক মহিলারাই। শুধু উত্তরপাড়া নয়। হাওড়া-বর্ধমান মেন, কর্ড এবং তারকেশ্বর, আরামবাগ ও কাটায়ো শাখার বহু স্টেশনের ছবিটা এমনই। নিয়ম মেনে প্রায় সব স্টেশনেই তৈরি হয়েছে মহিলা শৌচাগার। কিন্তু সে শৌচাগার ব্যবহারের উপযুক্ত কিনা তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন!
নিত্যযাত্রী মহিলাদের অভিযোগ, কোথাও শৌচাগারে তালা দেওয়া থাকে। আবার যেখানে শৌচাগারের তালা খোলা সেখানে দরজা আটকানোই দায়! কোথাও আবার দরজার ভিতরের ছিটকিনি নেই। কোথাও আবার মাথার উপর ছাদ নেই। কোথাও গোটা দরজাটাই খুলে রেখে দেওয়া হয়েছে পাশের দেওয়ালে। ফলে নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন মহিলারা।
পূর্ব রেলের নিজস্ব সাফাইকর্মী রয়েছে। প্ল্যাটফর্ম পরিষ্কার রাখার জন্য ঠিকাদার সংস্থাকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্ল্যাটফর্মে ঝাঁটও পড়ে নিয়মিত। কিন্তু শৌচাগার নিয়েই যত সমস্যা। হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখার নিত্যযাত্রী মঞ্জুশ্রী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা ট্রেনে ওঠার আগেই সতর্ক থাকি। কোনও প্রয়োজনেও যেন শৌচাগার ব্যবহার করতে না হয়! রেলের প্রায় সব শৌচাগারই নোংরা।’’ আর এক যাত্রী সুনন্দা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা যাঁরা অফিস যাত্রী, তাঁরা এ টুকু দাবি করতেই পারি। যাতে একটি পরিচ্ছন্ন শৌচাগার পাওয়া যায়। প্রয়োজনে আমরা মূল্য দিতেও রাজি।’’
তবে ব্যতিক্রমও রয়েছে। কোন্নগরের বাসিন্দা সুচেতনা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোন্নগর ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের শৌচাগারটি বেশ পরিষ্কার। তবে এটা নতুন হয়েছে। আগে এমন ছিল না। কতদিন এমন পরিষ্কার থাকে সেটাই দেখার।’’ ডানকুনি স্টেশনে আবার যে শৌচাগার রয়েছে তা বিনামূল্য নয়। পয়সা দিয়ে ব্যবহার করতে হয়। বেলমুড়ি, ধনেখালিতে শৌচাগারের বালাই নেই।
তবে সমস্যা শুধু মহিলাদের নয়। একই ভাবে ভুগছেন পুরুষেরাও। তাঁদেরও অভিযোগ রেলের বিরুদ্ধে। বালি স্টেশনে সুমাদেবীর মতোই সমস্যায় প়ড়েছিলেন সজল মুৎসুদ্দি। তিনি বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগে আমি বালি স্টেশনে ঘোর বিপদে পড়েছিলাম। শৌচাগারের তালা খোলানোর জন্য ছুটতে হয়েছিল স্টেশন মাস্টারের ঘর পর্যন্ত।’’ তাঁর দাবি, ‘‘রেল এত বড় একটি সংস্থা। কেন্দ্রীয় সরকার স্বচ্ছতা নিয়ে এত প্রকল্প ঘোষণা করছে। অথচ, রেলেরই দায়িত্ব এত কম! আলাদা করে পয়সাই বা আমাদের দিতে হবে কেন? টিকিট কেটেই তো ট্রেনে উঠি আমরা।’’
এ বিষয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধার ব্যাপারে রেল এখন অনেক সচেতন। মানুষের নানা সমস্যার কথা রেলের নিজস্ব অ্যাপেও জানানোর ব্যবস্থা আছে। সেই সব গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। ব্যবস্থাও
নেওয়া হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy