যমজ দুই কন্যা।—নিজস্ব চিত্র।
যমজ কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার ‘অপরাধে’ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হলেন এক গৃহবধূ।
বিজলি রায় নামে ওই গৃহবধূর বাপেরবাড়ি ত্রিবেণীর নিরঞ্জন পল্লিতে। ২০১১ সালে সোনারপুরের নয়াবাগের বাসিন্দা অমিত রায়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। গত বছরের নভেম্বরে যমজ কন্যাসন্তানের জন্ম দেন বিজলিদেবী। তখন থেকেই নির্যাতন শুরু হয় বলে তাঁর অভিযোগ। কয়েক সপ্তাহ ধরে দুই সন্তানকে নিয়ে বাপেরবাড়িতেই রয়েছেন বিজলিদেবী। মঙ্গলবার তিনি চুঁচুড়া আদালতে স্বামী এবং শ্বশুর-শাশুড়ির নামে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন। হুগলির পুলিশ সুপার এবং মগরা থানাকেও জানান।
বিজলিদেবী বলেন, ‘‘দুই মেয়ের জন্ম দিয়ে কী অপরাধ করেছি? ওদের জন্মের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আমাকে এড়িয়ে চলছিল। কোন ওখানে আমার উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চালাচ্ছিল। তাই বাপেরবাড়ি চলে আসি। মেয়েদের কথা ভেবেই আদালতে গিয়েছি।’’ অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অমিতবাবু। তিনি বলেন, ‘‘কোনও কথা বলব না’’। এর পরেই ফোন কেটে দেন। পরে ফের ফোন করা হলেও ধরেননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অমিতবাবু একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। পরিবারে অনটন থাকলেও বিয়ের পর থেকে তাঁর সঙ্গে বিজলিদেবীর সম্পর্ক ভালই ছিল। বিজলিদেবী ও তাঁর পরিবারের অভিযোগ, দুই মেয়ের জন্ম দেওয়ার পর থেকেই অমিত এবং তাঁর পরিবারের লোকেরা যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। চলতি বছরের মে মাসের শেষ দিকে দুই মেয়েকে নিয়ে সোনারপুরে ফেরেন বিজলিদেবী। অভিযোগ, সেখানে তাঁকে লাঞ্ছনা, গঞ্জনার শিকার হতে হয়। অমিত তাঁর সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেন। গত ১০ জুন অশান্তি চরমে ওঠে। এর দু’দিন পরেই সোনারপুর থানায় একটি জেনারেল ডায়েরি করা হয় বলে ওই বধূর পরিবারের দাবি। তার পরেই মেয়েদের নিয়ে ত্রিবেণী চলে আসেন বিজলিদেবী।
বিজলিদেবীর বাবা বিজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মেয়েদের খাবারের ব্যবস্থাটুকুও জামাই করত না, এতটাই নিষ্ঠুর ছিল। তাই মেয়েকে নিয়ে চলে আসি। ওরা আমার সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy