গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে চন্দননগর। সেই কোন ফরাসি আমল থেকে তার সাজানো গোছানো গঙ্গাপাড়। সম্প্রতি সে শহর ‘গ্রিন সিটি’-র তকমা পেয়েছে। তাই উঠে পড়ে লেগেছে প্রশাসন। যেখানে যতটুকু বিচ্যুতি রয়েছে মেরামত করে নিতে হাতে নেওয়া হয়েছে একগুচ্ছ প্রকল্প। নতুন করে সাজিয়ে তোলা হবে শহর।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর এলাকায় মোট ন’টি পার্কে তৈরি হচ্ছে নতুন করে। তার বাইরে পুরনো পুকুর সংস্কার, আলোক সজ্জা, গঙ্গাপাড়ের সৌন্দর্যায়ন, বৃক্ষ রোপনের কথাও ভাবা হচ্ছে। চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রত্যেক কাউন্সিলরের থেকে তাঁদের এলাকার বিভিন্ন কাজের পরিকল্পনা চেয়েছি। ইতিমধ্যেই শহরে গ্রিন সিটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ৯ কোটি ব্যয় করা হবে। পরবর্তী পর্যায়ে কাজ হবে আরও ২০ কোটি টাকার।
গঙ্গাপাড়ের অন্য শহরগুলোর থেকে অনেকটাই আলাদা চন্দননগর। অনেক দিন আগে থেকেই সেখানে রয়েছে সাজানো স্ট্যান্ডঘাট। দু’বেলা বহু মানুষ গঙ্গার পাড়ে হাঁটতে আসেন। শহরের বাইরের বহু মানুষের কাছেও আকর্ষণের মূল এই ঘাট। গ্রিন সিটি প্রকল্পকে সামনে রেখে পুরসভা সম্প্রতি ঘাটের উন্নয়ন করতে চাইছে। শহরের ভিতরে পুরনো পার্কগুলিও নতুন করে সাজিয়ে তোলা হবে। পাশাপাশি আরও ন’টি পার্কের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পুকুরগুলির। বেশির ভাগই মজে গিয়েছে। সংস্কার করা হয় না দীর্ঘদিন। আবার কোথাও আবর্জনা ফেলে সেগুলি বোজানোর চেষ্টা চলছে। বাগবাজার এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতি যে, কোনও কোনও এলাকায় আগুন লাগলে তা নেভানোর জলটুকু পর্যন্ত পাওয়ার উপায় নেই দমকল কর্মীদের। পুরসভা যদি কিছু পুকুর অন্তত শেষ পর্যন্ত রক্ষা করতে পারে তাহলে খুবই ভাল হয়।’’ তাঁর দাবি, গ্রিন সিটি প্রকল্পের আওতায় বেশ কিছু পুকুরও সংস্কার করা হবে।
নতুন করে আলোয় সাজিয়ে তোলা হবে গঙ্গাপা়ড়-সহ গোটা পুর এলাকা। সে ক্ষেত্রে মাথায় রাখা হচ্ছে উষ্ণায়নের বিষয়টি। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, কম উত্তাপের বৈদ্যুতিক আলো লাগানো হবে। আলোর শহর চন্দননগরের শিল্পীদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা সারা বিশ্বে প্রশংসিত। পুরসভার মেয়র-ইন-কাউন্সিল সবিতা দাস গ্রিন সিটি প্রকল্পে পুরসভার হয়ে নানা কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা পরিবেশের কথা মাথায় রেখে এই প্রকল্পে কম উত্তাপের আলো ব্যবহার করছি শহর সাজাতে।’’ প্রয়োজনে শহরের আলোক শিল্পীদের পরামর্শ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
স্বাস্থ্য দফতরের মেয়র-ইন-কাউন্সিল পার্থ দত্ত বলেন, ‘‘আমরা চাইছি চন্দননগরে গ্রিন সিটির কাজে সার্বিক পরিকল্পনা করে কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে। কাজের ক্ষেত্রে ভারসম্য রাখতে চাইছি আমরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy