পাশে: শেওড়াফুলিতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র
শেওড়াফুলি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মই ঠিকানা নূরজাহানের। বছর আটেকের মেয়েটা শনিবার বেজায় খুশি ছিল। কারণ সে পুলিশকাকুদের কপালে ফোঁটা দিয়েছে। গাল টিপে আদর করে মিষ্টি খাইয়ে দিয়েছে সেই কাকুরা।
উৎসাহের অন্ত ছিল না বর্ষারও। পুলিশ দেখে একটুও ভয় পায়নি সে। নূরজাহান-বর্ষাদের মতো বেশ কয়েকজন প্ল্যাটফর্ম-শিশুকে নিয়ে শনিবার ভাইফোঁটার উৎসব করল ‘মানবিক’ নামে একটি ফোরামের সদস্যরা। শেওড়াফুলি ফাঁড়ি, জিআরপি থানা এবং আরপিএফ ব্যারাকে ওই খুদেদের নিয়ে উৎসব পালিত হল।
‘মানবিক’ নামে ফোরামটির সদস্যদের বক্তব্য, ওই শিশুরা তাদের শৈশব থেকেই বঞ্চিত। কেউ কেউ এখন থেকেই নেশায় আসক্ত। তাঁদের সমাজের মূলস্রোতে ফেরানোর জন্যই বৃষ্টি উপেক্ষা করে এ দিন ভাইফোঁটার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শুধু শেওড়াফুলি নয়, বিভিন্ন জায়গাতেই ভাইফোঁটা উৎসব হয়ে উঠেছিল সর্বাঙ্গীন। কোথাও হোমের আবাসিকেরা ফোঁটা পেয়েছেন। কোথাও ধর্মের ব্যবধান ঘুচেছে চন্দনের ফোঁটা আর ধান-দূর্বার আশীর্বাদে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশের উদ্যোগে শ্রীরামপুরে চেশায়ার হোমে ভাইফোঁটা অনুষ্ঠান হয়। মহিলা পুলিশকর্মীরা হোমের আবাসিকদের ফোঁটা দেন। আবার পুলিশ অফিসারদের কপালে ফোঁটা দেন হোমের মেয়েরা। শনিবার সকালেও থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের তরফে সেখানে ভাইফোঁটা হয়। মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ওই হোমের বর্ষীয়ান আবাসিক শুভ্রেন্দু নাগ বলেন, ‘‘এই সব অনুষ্ঠানেই পাঁচ জনের সঙ্গে দেখা ও শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। খুব ভাল লাগে।’’
এ দিন শেওড়াফুলি ফাঁড়ির মোড়ে সম্প্রীতির ভাইফোঁটা হয় বৈদ্যবাটি পুরসভা এবং শ্রীরামপুর থানার উদ্যোগে। হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রিত হয়ে উৎসব পালন করেন। মুসলিম মহিলা হিন্দু ভাইকে ফোঁটা দেন। আবার হিন্দু বোন মুসলিম ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দেন। মিষ্টিমুখ চলে। সম্প্রীতির বাতাবরণে জিটি রোডের ধারে ওই উৎসবে সামিল হন পথচলতি অনেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy