Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in Howrah-Hooghly

হুগলিতে করোনার দোসর ডেঙ্গিও

গত দিন দশেকের মধ্যে শ্রীরামপুর, রিষড়া এবং কোন্নগরে অন্তত পাঁচ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রকাশ পাল
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২০ ০২:৩৫
Share: Save:

এ যেন গোদের উপরে বিষফোঁড়া!

একে করোনায় ত্রাহি রব, তার উপর ডেঙ্গিও হাজির হুগলিতে। গত দিন দশেকের মধ্যে শ্রীরামপুর, রিষড়া এবং কোন্নগরে অন্তত পাঁচ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত রুখতে পদক্ষেপ শুরু করেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

ভরা বৈশাখেও তেমন গরম নেই। মাঝেমধ্যে ঝড়বৃষ্টিও হচ্ছে। সামনে বর্ষা। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, এই আবহে জেলায় কয়েক জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন, এই খবর পেতেই কোভিড ১৯-এর পাশাপাশি মশাবাহিত ওই রোগের কামড় সামলাতে মরিয়া হয়েছে প্রশাসন।

পরিস্থিতি পর্যালোচনায় শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দীর্ঘ প্রশাসনিক বৈঠক হয় জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাওয়ের নেতৃত্বে। জেলাশাসকের দফতরে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, জেলা সভাধিপতি মেহবুব রহমান প্রমুখ। সেখান থেকে চার মহকুমাশাসকের দফতর এবং ব্লক অফিসগুলিতে ভিডিয়ো কনফারেন্স হয়।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে বিভিন্ন পুরসভা এবং ব্লকের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। মশার লার্ভা মারার তেল ছেটানো, বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার কথা বলা হয়। শ্রীরামপুর এবং রিষড়া পুরসভাকে বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হয়।

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, করোনা মোকাবিলা নিয়ে ব্যস্ততার মধ্যেও মশার বাড়বাড়ন্তের উপযোগী পরিবেশের দিকে লক্ষ্য রেখেই ডেঙ্গি মোকাবিলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

সিএমওএইচ জানান, পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ব্লকে আশাকর্মীরা এবং শহরে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা সমীক্ষা করবেন। লকডাউনের নিয়ম মেনে তাঁরা ব্যক্তিগত সুরক্ষা এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করবেন। কারও বাড়ির ভিতরে না ঢুকে তাঁরা তথ্য সংগ্রহ এবং মানুষকে সচেতন করার উপরে জোর দেবেন। কোথাও জল জমলে, তা জেনে ব্যবস্থা নিতে হবে। বাড়ির ভিতরে বা আশপাশে যাতে জল না জমে, সাধারণ নাগরিকদেরও তা দেখতে হবে। করোনা এবং ডেঙ্গি— যথাযথ নিয়ম মেনে দুই রোগ মোকাবিলার কাজই একসঙ্গে চলবে।

জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কঠোর ভাবে অনুশাসন মেনেই করোনা এবং ডেঙ্গিকে হারাতে আমরা বদ্ধপরিকর।’’

শ্রীরামপুর, রিষড়া এবং কোন্নগর— তিন পুর কর্তৃপক্ষই জানিয়েছেন, ডেঙ্গি মোকাবিলায় পুরনো অভিজ্ঞতাকে সম্বল করে তাঁরা ইতিমধ্যেই লড়াইতে নেমেছেন। শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায় জানান, গত জানুয়ারি মাস থেকে চার জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে তিন জন অন্য জায়গায় গিয়ে থেকে আক্রান্ত হন। সম্প্রতি এক জন আক্রান্ত হন। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি জ্বরের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। মশার লার্ভা মারতে তেল ছড়ানো হবে।’’ রিষড়ার পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র বলেন, ‘‘তেল ছেটানো হচ্ছে। প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী সব পদক্ষেপ করা হবে।’’ কোন্নগরের পুরপ্রধান বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ডেঙ্গি মোকাবিলায় আমারা বছরভর কাজ করি। সতর্কই আছি।’’

গত কয়েক বছরে এই জেলায়, বিশেষত শহরাঞ্চলে ডেঙ্গি ভালই ভুগিয়েছে। প্রকোপের বহরে ২০১৬ সালে শ্রীরামপুরে ডেঙ্গি ‘মহামারি’ ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। গত বছরেও শ্রীরামপুর, রিষড়া, ডানকুনি-সহ কয়েকটি জায়গায় ডেঙ্গির চোখরাঙানি দেখা গিয়েছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Howrah-Hooghly Dengue Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE