অ্যাসিড আক্রান্তকে দেখছেন সেভ ডেমোক্রেসির সদস্যরা। নিজস্ব চিত্র।
উলুবেড়িয়া আদালতে মঙ্গলবার গোপন জবানবন্দি দিলেন অ্যাসিডে আক্রান্ত প্রৌঢ়া নির্মলা সিংহ। তবে এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত পড়শি গীতা সিংহ এবং তাঁর স্বামী সুনীলবাবুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তবে ওই দম্পতির ছেলে সুমিতকে এখনও ধরতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আক্রান্ত ওই প্রৌঢ়া। পুলিশ জানিয়েছে, তল্লাশি অভিযান চলছে।
ঘটনাটি ঘটেছিল ১৬ নভেম্বর রাতে বাউড়িয়ায়। প্রতিবেশী তথা আত্মীয়ের হুকিংয়ের চেষ্টার ‘প্রতিবাদ’ করেছিলেন প্রাক্তন সেনাকর্মী ব্রিজকিশোর সিংহের স্ত্রী নির্মলাদেবী। তাঁরা বাউড়িয়ার ফোর্ট গ্লস্টার সিপাই কোয়ার্টারে থাকেন। ঘটনার দিন মেয়ে পল্লবীর সঙ্গে বাজার সেরে নিজের ঘরে ঢুকতে যাওয়ার আগে আবাসনেই আক্রান্ত হন প্রৌঢ়া। অ্যাসিডে তাঁর পিঠের বাঁ দিক এবং বাঁ হাতের একাংশ পুড়ে যায়। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে আমরা কয়েক জন ওদের হুকিংয়ের চেষ্টার প্রতিবাদ করেছিলাম। ১৬ নভেম্বর রাতে ঘরে ঢুকতে যাওয়ার আগেই সুনীলের বউ কিছু একটা ছোড়ে। সুনীলরাও সেখানে ছিল। আমি চিৎকার করতেই ফের কিছু ছোড়া হয়। গা জ্বালা করতে শুরু করে। আমি মাটিতে পড়ে যাই। পরে শুনলাম অ্যাসিড।’’ তাঁর মেয়ে পল্লবীর অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার পুলিশ নির্মলাদেবীর আত্মীয় সুনীল সিংহ এবং তাঁর স্ত্রী গীতাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী, অ্যাসিড হামলায় দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। দোকানে দোকানে অ্যাসিড বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞাও জারি রয়েছে। তবু রাজ্যে মহিলাদের উপরে অ্যাসিড হানার বিরাম নেই। দিন কয়েক আগে এই হাওড়ারই উলুবেড়িয়ায় এক বধূর উপরে অ্যাসিড হামলার অভিযোগ ওঠে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ফের একই ঘটনা ঘটায় সরব হয়েছে সেভ ডেমোক্রেসি। মঙ্গলবার সেভ ডেমোক্রেসির রাজ্য সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের এক প্রতিনিধি দল অ্যাসিড আক্রান্ত নির্মলাদেবী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। চঞ্চলবাবুর দাবি, ‘‘উচ্চ আদালতের কড়া নির্দেশ রয়েছে অ্যাসিড বিক্রির ক্ষেত্রে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে সে বিষয়ে ঠিকমতো নজরদারি করা হচ্ছে না। তা ছাড়া, অ্যাসিড আক্রান্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে রাজ্য সরকারের উদাসীন। রাজ্যে গত তিন বছরে ৯৪ জন অ্যাসিড আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু ক্ষতিপূরণ পেয়েছে জনা চার পাঁচ।’’
নজরদারি প্রসঙ্গে পুলিশ জানায়, এই অ্যাসিড মূলত শৌচাগার পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। পুলিশ নজরদারি চালায়। তবে অভিযোগ যখন উঠছে, তখন নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy