অভিযুক্ত: উলুবেড়িয়া আদালতে তোলা হচ্ছে আরতিকে।—নিজস্ব চিত্র।
রাখে পুলিশ মারে কে!
আমতার বসন্তপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য শেখ হান্নান হককে খুনে মূল অভিযুক্ত ইদ্রিশ জমাদারকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। আর সে কিনা এতদিন দিব্যি কাটিয়ে দিল পুলিশেরই আশ্রয়ে!
ইদ্রিশকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে রবিবার রাতে কলকাতার বউবাজার এলাকার একটি ভাড়াবাড়ির বাসিন্দা, কলকাতা পুলিশের হোমগার্ড আরতি ঘোষালকে গ্রেফতার করেছে আমতা থানার পুলিশ। আরতি সম্পর্কে ইদ্রিশের শ্যালিকা। লালবাজারে কর্মরত। তবে, ইদ্রিশকে পুলিশ ধরতে পারেনি। পুলিশ যখন ওই বাড়িতে হানা দেয়, তখন ‘পাখি’ উড়ে গিয়েছে।
হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুলিশে চাকরি করেও আরতি একজন খুনে অভিযুক্তকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তাঁর উচিত ছিল অভিযুক্তকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেওয়া। অভিযুক্তকে পালিয়ে যেতেও সাহায্য করেছেন আরতি।’’
গত ২৪ জুন রাতে বসন্তপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামে বাড়ির কাছেই হান্নানকে কুপিয়ে, হাত-পায়ের শিরা কেটে খুন করা হয়। এলাকার তৃণমূল নেতা ইদ্রিশ দলবল নিয়ে হান্নানকে খুন করেন বলে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশের অনুমান, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ওই খুন। ওই রাতেই ইদ্রিশের পাঁচ অনুগামীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। কিন্তু নাগাল মিলছিল না অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার।
রবিবার পুলিশ কী ভাবে জানল ইদ্রিশ তাঁর পুলিশ-আত্মীয়ের বাড়িতে আস্তানা গেড়েছেন?
বসন্তপুর গ্রামের বহু মানুষ কর্মসূত্রে বউবাজার এলাকায় থাকেন। তাঁরাই ইদ্রিশকে দেখতে পেয়ে তাঁদের জানান এবং বাড়িটিও চিহ্নিত করে দেন বলে দাবি করেছেন হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের এক কর্তা। সেইমতো রবিবার রাতে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। ইদ্রিশকে পাওয়া না-গেলেও আরতিকে জেরা করেই পুলিশ জানতে পারে, এতদিন সেখানেই লুকিয়ে ছিলেন ইদ্রিশ। যা শুনে অবাক হয়েছেন তদন্তকারীরা। আরতি তদন্তকারীদের জানান, পুলিশ আসার আগে রবিবার তিনিই ইদ্রিশকে রিষড়ায় রওনা করিয়ে দেন। রিষড়ায় তল্লাশি চালিয়েও পুলিশ অবশ্য ইদ্রিশকে ধরতে পারেনি।
সোমবার আরতিকে উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। নিজের চাকরির কথা বলে বিচারকের কাছে জামিনের আবেদন করেন আরতি। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে বিচারক আরতিকে ১২ জুন পর্যন্ত জেল-হাজরে রাখার নির্দেশ দেন। আগে যে পাঁচ জনকে ধরা গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাদের পুলিশ হেফাজতে থাকার মেয়াদ সোমবারই শেষ হয়। পুলিশ আর তাদের নিজেদের হেফাজতে নিতে না-চাওয়ায় বিচারক ওই পাঁচ জনকেও ১২ জুন পর্যন্ত জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তবে, ইদ্রিশকে ধরা না-গেলে তদন্ত যে গতি পাবে না তা স্বীকার করছেন গ্রামীণ জেলা পুলিশের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy