প্রতীকী ছবি।
বছর ষোলোর এক বালিকার শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্তকে পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি। তাকে বাঁচাতে বালিকার পরিবারকে ৫০ হাজার টাকার টোপ দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করানোর চেষ্টা এবং সে জন্য হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠল ডোমজুড়ের একটি গ্রামের তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ওই নেতার বিরুদ্ধেও পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে হতদরিদ্র পরিবারটি। কিন্তু এখনও দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না-হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে পরিবারটি। বালিকাটি এক বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করত। এক মাসেরও বেশি সে ভয়ে কাজে যেতে পারছে না।
বালিকাটি বলে, ‘‘সংসারে টাকার খুব দরকার। বাবা দর্জির কাজ করেন। অথচ দুই অভিযুক্তের কেউই ধরা পড়ল না। আমি ভয়ে কাজে যেতে পারছি না।’’
শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্তের নাম করিম মিদ্দে। আর যে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে তাকে বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে, সেই দাউদ মিদ্দে ডোমজুড়ের একই গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় পঞ্চায়েতের দু’বারের উপপ্রধান। ২০১৮-তেও পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। জিততে পারেননি। বর্তমানে তিনি দলের পক্ষ থেকে ওই পঞ্চায়েতের কাজ দেখার জন্য তৈরি ‘স্টিয়ারিং কমিটি’র সহ-সভাপতি।
বালিকাটির পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্ত করিম দাপুটে নেতা দাউদের আশ্রয়ে আছে। সে জন্য পুলিশ তাকে ধরছে না। বালিকার কাকা বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে বাড়ি ফেরার সময়ে দাউদ দাদাকে (বালিকার বাবা) ধরে মামলা প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়ে ৫০ হাজার টাকার টোপ দেয়। দাদা প্রস্তাব নাকচ করে দেন। তারপর থেকেই দাউদ এবং ওর লোকজন আমাদের পথেঘাটে হুমকি দিচ্ছে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ আমাদের পক্ষে আছেন। তবু ভয় লাগছে।’’
হাওড়া সিটি পুলিশ কমিশনারেটের দাবি, করিমকে ধরার চেষ্টা হচ্ছে। সে পলাতক। দাউদের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু হয়েছে। দাউদ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আইন তার নিজের পথে চলবে। আসলে আমি দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার। দলের অন্য গোষ্ঠীর লোকজনই আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য বালিকাটির পরিবারকে দিয়ে থানায় অভিযোগ করিয়েছে।’’
জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। ডোমজুড়ের ওই এলাকাটি জগৎবল্লভপুর বিধানসভা কেন্দ্রে পড়ে। বিধায়ক আব্দুল গনি বলেন, ‘‘ওই শ্লীলতাহানির ঘটনা শুনেছি। কিন্তু নির্যাতিতার পরিবারকে যে ওই রকম প্রস্তাব বা হুমকি দেওয়া হয়েছে শুনিনি। খোঁজ নেব। যদি সত্যি হয় তা কঠোর ভাবে নিন্দনীয়। গরিব পরিবারটি যাতে সুবিচার পায় তা পুলিশের দেখা অবশ্য কর্তব্য। ওই রকম প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠলে পুলিশ যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।’’
পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে ওই বালিকা নিজে জানিয়েছে, গত ১৫ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৭টা নাগাদ সে যখন কাজ সেরে ফিরছিল, তখন করিম তার শ্লীলতাহানি করে এবং ধর্ষণ করতে উদ্যত হয়। কোনওমতে তার খপ্পর থেকে বেরিয়ে বাড়িতে এসে সে সব কথা বলে। ঘটনার পর থেকেই ওই যুবকের পক্ষ নিয়ে দাউদ আসরে নামেন বলে অভিযোগ। করিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর পরের দিন হাওড়া আদালতে ওই বালিকা ১৬৪ ধারায় বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দেয়। দাউদের নামে গত ৬ ফেব্রুয়ারি এফআইআর করে পরিবারটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy