উদ্যোগ: পলিব্যাগে চাষ মাশরুমের (বাঁ দিকে) চলছে আনাজ পরিচর্যা (ডান দিকে)। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
স্কুলের ছাদে আনাজ চাষ শুরু হয়েছিল এক বছর আগে। এ বার তার সঙ্গে যোগ হল মাশরুম চাষও। এ ভাবেই মিড-ডে মিল প্রকল্পে সাবলম্বী হচ্ছে পুরশুড়ার পারুল প্রাথমিক বিদ্যালয়।
স্কুলের পুরনো ভবনের অ্যাসবেসটসের ছাউনি দেওয়া একটি শ্রেণিকক্ষে গত ২০ ডিসেম্বর থেকে মাশরুম চাষ শুরু হয়। মোট ৩৫টি পলিব্যাগে মাশরুমের ফলনও শুরু হয়ে গিয়েছে। চাষে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন চিলাডাঙি গ্রামের বিশেষজ্ঞ হারাধন রায়। আর কয়েক দিনের মধ্যেই পুষ্টিকর এবং ওষধি গুণসম্পন্ন মাশরুমের নানা পদ ছাত্রছাত্রীদের পাতে পড়বে বলে জানিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিপ্লবকুমার সামন্ত।
রাজ্যে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে মিড-ডে মিলে মাথাপিছু বরাদ্দ ৪ টাকা ৪৮ পয়সা। সেই বরাদ্দে আনাজ, ডাল, সয়াবিন, পোস্ত, ডিম, তেল-সহ রান্নার মুদিখানার সামগ্রী এবং গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে হয় স্কুলগুলিকে। কিন্তু এই বরাদ্দে ওই প্রকল্প চালাতে নাজেহাল হয় প্রায় সব স্কুলই। রয়েছে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবিও। তাই নাজেহাল অবস্থা থেকে বের হতে ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে স্কুলের নতুন ভবনে ছাদের দেড় হাজার বর্গফুট এলাকায় ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে জৈব পদ্ধতিতে আনাজ চাষ শুরু করেছিলেন প্রধান শিক্ষক। উৎপাদিত পালং, মুলো, লাউ, কুমড়ো, টোম্যাটো, বেগুন, ক্যাপসিক্যাম, আদা, রসুন ইত্যাদি টাটকা আনাজে সপ্তাহের দু’দিন (যে দিনগুলিতে শুধু আনাজের পদ থাকে) মিড-ডে মিল চলে যাচ্ছে বলে স্কুল সূত্রের খবর।
প্রধান শিক্ষক বলেন, “আনাজ চাষ করে মিড-ডে মিলে সরকারি বরাদ্দের উপর নির্ভরতা আমরা অনেকটাই কমাতে পেরেছি। প্রতি সপ্তাহের সোম এবং বৃহস্পতিবার বাজার থেকে আনাজ একবারেই কিনতে হচ্ছে না। অন্য দিনগুলিতেও স্কুলের টাটকা আনাজ কিছু কিছু ব্যবহার হচ্ছে। এ বার মাশরুম উৎপাদন হলে মিড-ডে মিলে বাড়তি মাত্রা যোগ হবে। বাজারের খরচ আরও একটু কমবে।”
শুধু পুষ্টি জোগাতে বা খরচ সাশ্রয়ের জন্যই নয়, মাশরুম চাষের পদ্ধতি ছাত্রছাত্রীদের হাতে-কলমেও শেখানো হচ্ছে। যাতে প্রয়োজনে আগামী দিনে তারা মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারে বলে প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন। আনাজ বাগান এবং মাশরুম চাষের পরিচর্যা করে ছাত্রছাত্রীরাই। পঞ্চম শ্রেণির তন্ময় ধঁক, অনীশ মান্না বা চতুর্থ শ্রেণির সোমা সামন্ত, সম্প্রীতি গড়াই— সকলের বক্তব্য একই। তাদের কথায়, “নিজেরা চাষ করা শিখছি। ভাল খাবারও খাচ্ছি।”
মাশরুম চাষের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্কুল সভাপতি তথা স্থানীয় শ্রীরামপুর পঞ্চায়েত প্রধান পুষ্পিতা মৈত্র। তিনি বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে শিক্ষকদের এই উদ্যোগে আমরা পুরো
অঞ্চলই গর্বিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy