Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
এসিজেএমকে হেনস্থার নালিশ

বিচারককে হেনস্থা কাণ্ডে ধৃত তৃণমূল কাউন্সিলরের ভাই-সহ ২

চন্দননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, সরকারি আধিকারিককে হেনস্থা, শ্লীলতাহানি, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, মারধর-সহ মোট ৮টি ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চন্দননগর শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০২:২৩
Share: Save:

মহিলা বিচারককে হেনস্থার দু’দিন পর গ্রেফতার করা হল তৃণমূল কাউন্সিলরের ভাই-সহ দু’জনকে। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম ভোলা বিশ্বাস এবং সুজয় সাহা। দু’জনেরই বাড়ি মানকুণ্ডু নতুনপাড়ার কাছে আশ্রমপাড়ায়। ভোলা নিজে চন্দননগর শহর তৃণমূলের তফসিলি জাতি-উপজাতি সেলের সভাপতি। তার দাদা পীযূষ বিশ্বাস চন্দননগর পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। সুজয় এলাকায় তৃণমূল কর্মী এবং ভোলার সহযোগী হিসেবে পরিচিত।

চন্দননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, সরকারি আধিকারিককে হেনস্থা, শ্লীলতাহানি, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, মারধর-সহ মোট ৮টি ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। ধৃতদের চন্দননগর আদালতের এসিজেএম রিনা তালুকদারের এজলাসে তোলা হলে বিচারক জামিন নাকচ করে তাদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই দু’জনকে মানকুণ্ডু এলাকা থেকে ধরা হয়েছে। বাকিদের চিহ্নিত করে ধরার চেষ্টা চলছে।’’

রবিবার, জগদ্ধাত্রী বিসর্জনের দুপুরে চন্দননগরের পাদ্রিপাড়ার কাছে চন্দ্রাণী চক্রবর্তী নামে এক বিচারকের গাড়ি আটকে তাঁকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে মানকুণ্ডু নতুনপাড়া পুজো কমিটির লোকজনের বিরুদ্ধে। ওই পুজো কমিটি তখন প্রতিমা বিসর্জন দিতে যাচ্ছি‌ল।

চন্দ্রাণীদেবী চন্দননগর আদালতের বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (৩ নম্বর কোর্ট)। ওই দিন তিনি এসিজেএম-এর দায়িত্বে ছিলেন। অভিযোগ, শোভাযাত্রায় বিচারকের গাড়ি আটকে পড়লে তার দেহরক্ষীরা রাস্তা ফাঁকা করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু এক দল মত্ত যুবক গাড়ি আটকে হুজ্জুত শুরু করে।

চালক বিদ্যুৎ চন্দ্র তাদের জানান, গাড়িতে বিচারক আছেন। কিন্তু তার তোয়াক্কা না করে কয়েক জন বিদ্যুৎকে মারধর করে। চন্দ্রাণীদেবীকেও হেনস্থা করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলায়। বিচারকের গাড়ি আদালতে পৌঁছে দেয় পুলিশই। পরে চন্দ্রাণীদেবী চন্দননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

নতুনপাড়ার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ভোলা ওই ঘটনায় প্রকৃত দোষী। তাঁকে গ্রেফতারের দাবিতে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ চন্দননগর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন নতুনপাড়ার বেশ কিছু বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে অনেক মহিলাও ছিলেন।

তাঁরা দাবি তোলেন, বাড়ি-বাড়ি তল্লাশি করে নির্দোষ লোকজনকে ধরা যাবে না। প্রকৃত দোষীদেরই ধরতে হবে। কেননা, তাদের জন্য এলাকার সুনাম নষ্ট হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ভোলা এবং সুজয়কে গ্রেফতার করে আনলে বিক্ষোভকারীরা ক্ষান্ত হন।

ধৃত ভোলার দাবি, ‘‘ভাসানের শোভাযাত্রায় যানজট হওয়ায় গাড়ি ঘুরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। উত্তেজনার বশে একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তা বুঝতে পেরে বিচারকের কাছে ভুল স্বীকার করতেও যাওয়া হয়েছিল।’’

পুজো কমিটির কর্মকর্তারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Harrassment Judge Chandannagar TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE