সাজাব যতনে।—নিজস্ব চিত্র।
এক সময়ে এক দিকে বইত দামোদর, অন্য পাশে রূপনারায়ণ।
মাঝখানে জেগে ওঠা চরে প্রায় ৫০০ বছর আগে কালীপুজো শুরু করেছিলেন জমিদার কন্দর্পনারায়ণ রায়। তার পর থেকে সেই কালীপুজো আজও হয়ে চলেছে। তৈরি হয়েছে মন্দির। যা বাগনানের খালোড় কালীবাড়ির কালীপুজো হিসেবেই পরিচিত। যা দেখতে প্রতি বছর শুধু হাওড়ারই নয়, হুগলি, বর্ধমান, দুই ২৪ পরগনা এবং দুই মেদিনীপুর থেকেও বহু দর্শনার্থী আসেন। গমগম করে ওঠে মন্দির চত্বর। এ বারও পুজোর আয়োজন সারা।
পুজো যখন শুরু হয়, তখন বাগনানের অধিকাংশ এলাকা ছিল জঙ্গলে ঘেরা। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে জনবসতি। মন্দিরের সেবাইত শচীন ভট্টাচার্য জানান, প্রায় ৫০০ বছর আগে বর্ধমান রাজার থেকে খালোড় গ্রামে জমিদারি পান কন্দর্পনারায়ণ। এখানেই গড়ে তোলেন তাঁর কাছারি বাড়ি। দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে কন্দর্পনারায়ণ নদীর চরে মনোরম পরিবেশে প্রথম কালীপুজো শুরু করেন। পরে মন্দির নির্মাণ করে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময়ে প্রজারাও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
সেই দামোদর এবং রূপনারায়ণ গতিপথ পাল্টে সরে গিয়েছে দূরে। কিন্তু পুজোর নিয়মে বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। কালীপুজোর আট দিন আগে থেকে শুরু হয়ে যায় চণ্ডীপাঠ। পুজোর দিন চার প্রহরে পুজো, যাগযজ্ঞ, ভোগ নিবেদন চলে। রাতে আতসবাজি এবং তুবড়ি প্রতিযোগিতাকে ঘিরে মেতে ওঠেন গ্রামবাসীরা। মন্দির প্রাঙ্গণে মেলাও বসে যায়। শচীনবাবু বলেন, “বর্ধমান রাজার দেওয়া ৩৬৫ বিঘা দেবোত্তর সম্পত্তির আজ আর কিছু নেই। শুধু মন্দিরটুকু এক বিঘা জমির উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ১৯৩৯ সালে পুরোহিত মন্মথ গঙ্গোপাধ্যায় স্বপ্নাদেশ পেয়ে নিমগাছ কেটে বর্তমান বিগ্রহটি তৈরি করেন। সংস্কার হয় মন্দিরটিও।”
মন্দিরে নিত্যপুজো চলে। কিন্তু কালীপুজোর দিন মানুষের ঢল নামে। পুজো শেষে ভোরে দর্শনার্থীদের জন্য ভোগ বিতরণ করা হয়। বাসে-ট্রেনে চড়ে দর্শনার্থীরা চলে আসেন মন্দির প্রাঙ্গণে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy