মঞ্চের সামনে ভিড়ের মধ্যে থেকে বলে যাচ্ছেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। আর মঞ্চে বসে বাধ্য ছাত্রের মতো এক মনে তা নোট করে যাচ্ছেন নেতা। এমন উল্টো ছবিই শনিবার দুপুরে দেখা গেল সাঁকরাইলের আলমপুরে।
মঞ্চে সেই নেতা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। আর তাঁর সামনের বক্তারা কর্মিসভার জন্য জড়ো হওয়া নিচুতলার কর্মী। কর্মিসভার রেওয়াজ, নেতারা আসেন, বক্তৃতা দিয়ে চলে যান। কর্মীরা নিজেদের কথা বলার সুযোগ পান না। এ দিন গোড়াতেই সভার তাল বেঁধে দেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি কাজি আব্দুল রেজ্জাক ও আমতার দলীয় বিধায়ক অসিত মিত্র। মঞ্চে অধীরবাবু ও এই রাজ্যে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক সিপি জোশীর সামনেই তাঁরা বলেন, ‘‘আজকের কর্মিসভা হবে অন্য রকম। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি চান কর্মীরা তাঁদের বক্তব্য আগে রাখবেন, পরে বক্তৃতা দেবেন নেতারা।’’ এর পরেই সভা থেকে ভেসে আসে নানা বক্তব্য। এক কর্মী মাইক্রোফোন নিয়ে বক্তাদের কাছে যাচ্ছিলেন। সেটি নিয়ে নিজের আসন থেকে কথা বলেন কর্মীরা।
কী বললেন কর্মীরা? তাঁদের মধ্যে থেকে উঠে এল মূলত জেলা কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা। কর্মীদের অভিযোগ, তৃণমূল স্তরে তাঁরা আন্দোলন চাইলেও জেলার নেতারা তা অনুমোদন করেন না। জেলা কংগ্রেসকে দু’ভাগ করার কথাও বললেন কেউ কেউ। কোনও কর্মী আবার তরুণ প্রজন্মকে তুলে আনার জন্য কর্মশালার প্রয়োজনীয়তার উপরে জোর দেন। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে জনসংযোগ শক্ত করার কথাও বলেন কেউ কেউ।
বক্তৃতা দিতে উঠে খুশি অধীরবাবু বলেন, ‘‘কর্মীদের মধ্যে থেকে যে ভাবে পরামর্শ উঠে এল তাতে আমি আনন্দিত ও আপ্লুত। কিছু পরামর্শ বেশ মূল্যবান, সেগুলি নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের বৈঠকে কথা বলব।’’ কর্মীরা জেলা নেতাদের যে ভাবে সমালোচনা করলেন, সেই প্রসঙ্গে অধীরবাবু বলেন, ‘‘সব শুনলাম। তবে নেতাদের একটু সুযোগ দিন।’’ একই সঙ্গে জেলা নেতাদেরও সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘‘আপনাদেরও কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মিলেমিশে কাজ করতে হবে, না হলে সরে যেতে হবে।’’
কর্মীদের প্রশ্নে খুশি জোশীও। বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল স্তরে যাঁরা কাজ করছেন তাঁরাই দলের আসল নেতা।’’ কর্মিসভায় অসিতবাবু সঞ্চালনার কাজ করেন। প্রায় ২ হাজার কর্মী হাজির ছিলেন সভায়।
কর্মিসভার শেষে সাংবাদিকদের কাছে রাজ্যের সম্প্রতি বন্ধ হয়ে-যাওয়া শালিমার পেন্টস কারখানার প্রসঙ্গ তুলে অধীরবাবু বলেন, ‘‘একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, সরকারের কোনও হেলদোল নেই। এর ফলে বেকারি বাড়ছে, কর্মসংস্থান কমছে, যুব সমাজ দিশাহীন। পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে তাতে এই রাজ্যের ছেলেদের ভিনরাজ্যে গিয়ে হোটেলে কাজ করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy