Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

মেলায় নষ্ট মাঠ, অভিযোগ ক্রীড়া দফতরে

দাপট বেড়েছে মেলার। নষ্ট হচ্ছে মাঠ। ফলে, খেলা প্রায় ব্রাত্য হয়ে গিয়েছে ডোমজুড় প্রাচ্যভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। প্রাচ্যভারতী স্টেডিয়ামটি খাতায়-কলমে ডোমজুড়ের ঝাঁপড়দহ ডিউক ইনস্টিটিউশনের খেলার মাঠ। অভিযোগ শীতের মরসুমে মেলার দাপটে মাঠ নষ্ট হয়।

অবহেলার শিকার স্টেডিয়াম গরুর বিচরণক্ষেত্র।—নিজস্ব চিত্র।

অবহেলার শিকার স্টেডিয়াম গরুর বিচরণক্ষেত্র।—নিজস্ব চিত্র।

অভিষেক চট্টোপাধ্যায়
ডোমজুড় শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৪ ০১:২৯
Share: Save:

দাপট বেড়েছে মেলার। নষ্ট হচ্ছে মাঠ। ফলে, খেলা প্রায় ব্রাত্য হয়ে গিয়েছে ডোমজুড় প্রাচ্যভারতী ক্রীড়াঙ্গনে।

প্রাচ্যভারতী স্টেডিয়ামটি খাতায়-কলমে ডোমজুড়ের ঝাঁপড়দহ ডিউক ইনস্টিটিউশনের খেলার মাঠ। অভিযোগ শীতের মরসুমে মেলার দাপটে মাঠ নষ্ট হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সন্ধে নামলেই মাঠের ভিতর আড্ডা জমাচ্ছে বহিরাগতরা। মাঝেমধ্যেই মিলছে মদের বোতল। ফলে, স্থানীয় ফুটবলাররা যেমন খেলার সুযোগ হারাচ্ছেন, তেমনই নষ্ট হচ্ছে মাঠের পরিবেশ। এই বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ করেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। ইতিমধ্যেই মাঠের পাশে অবস্থিত ডোমজুড় ইয়ং মেন অ্যাসোসিয়েশন (ডিওয়াইএমএ) মাঠের সংস্কার দাবি করে চিঠি পাঠিয়েছে ক্রীড়া দফতরে। চিঠি দেওয়া হয়েছে স্কুল পরিচালন সমিতিকেও। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে স্কুল কর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি, মাঠে যে মেলাগুলি হয় তার সঙ্গে ডিওয়াইএমএ ক্লাবের অনেক সদস্যই সক্রিয় ভাবে সঙ্গে যুক্ত।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মাঠে আগে আইএফএর সিনিয়র লিগের বিভিন্ন ডিভিশন, নার্সারি লিগের খেলা হত। হাওড়া জেলা ফুটবল লিগ ও ডোমজুড় থানা ফুটবল লিগের খেলাও হত এখানে। কিন্তু মাঠের অবস্থা ক্রমশই খারাপ হতে শুরু করায় গত বছর তিনেক এই মাঠে আইএফএ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা কোনও খেলা দিচ্ছে না। থানা লিগের খেলাও হয় না বললেই চলে। সারা বছরে খেলা বলতে হল ডোমজুড় গোল্ড কাপ ও স্কুল ফুটবল।

ডিওয়াইএমএ ক্লাবের সম্পাদক ও স্থানীয় বাসিন্দা সুকুমার চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “আমাদের নার্সারি দলের খুদে ফুটবলাররা বিকেলে যখন মাঠে প্র্যাকটিস করে তখন মাঠে ঢুকে ক্রিকেট ও ভ্যাকুম বল খেলে বহিরাগতরা। বিষয়টি স্কুলকে বার বার জানানোর পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” স্থানীয় ফুটবলার মাসুদ আলি মোল্লার অভিযোগ, “এলাকায় একেই মাঠের অভাব। তার উপরে যে মাঠটি রয়েছে সেখানেও খেলা প্রায় হয় না বললেই চলে। খেলার মাঠে খেলারই অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।”

যদিও মাঠ নিয়ে কোনও রকম অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করে ওই স্কুুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামসুন্দর দত্ত বলেন, “স্কুলের পক্ষ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে মাঠে মাটি ফেলা হয়েছিল। এই মাঠেই আমাদের স্কুলের খেলাগুলি হয়। তাই স্কুল মাঠের দেখভাল করা হয় না এই অভিযোগ ঠিক নয়।” মাঠ নিয়ে শীঘ্রই আলোচনার আশ্বাস দিয়ে শ্যামসুন্দরবাবুর জানান, মাঠকে ঢেলে সংস্কারের জন্য অন্তত এক বছর সময় লাগবে বলে জানান তিনি।

স্কুলের সম্পাদক তথা ডোমজুড় পঞ্চায়েতের প্রধান তড়িত্‌ দেবের অভিযোগ, ডিওয়াইএমএ ক্লাব কর্তৃপক্ষ মাঠে মেলা বন্ধ করার দাবি জানালেও তাঁদের ক্লাবেরই কয়েক জন সদস্য ডোমজুড় বইমেলা ও ডোমজুড় উত্‌সবের সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে যুক্ত। তড়িত্‌বাবু বলেন, “স্কুল যদি মাঠে মেলার অনুমতি না দেয়, তা হলে চাপ তৈরি করা হবে। তাই আমরা কিছুটা বাধ্য হয়েই মাঠে মেলা করার অনুমতি দিই।”

এই মাঠে যে মেলাগুলি হয় তার মধ্যে অন্যতম হল ডোমজুড় বইমেলা। এই মেলা কমিটির কর্তা বাপি ঠাকুরের দাবি, “মাঠে মেলার পরে মাঠ পরিষ্কার করে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই মাঠ যদি সত্যিই উন্নত করার কোনও সঠিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়, তা হলে এলাকার খেলাধুলার উন্নতির স্বার্থে বইমেলা কমিটি মেলা অন্যত্র নিয়ে যেতে আমরা প্রস্তুত।”

হাওড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্কুলের অধীনস্থ কোনও মাঠে আইএফএ-র কোনও খেলা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। ওই মাঠটির দেখাশোনার দায়িত্ব যদি ডোমজুড় থানা ক্রীড়া সংস্থা অথবা স্থানীয় কোনও ক্লাবকে দেওয়া হয়, তা হলে আমরা অবশ্যই ওই মাঠে জেলা লিগ-সহ আইএফএ অনুমোদিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার খেলার আয়োজন করব।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE