দরজা ভেঙে ঘর থেকে এক নার্সের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে হুগলির শ্রীরামপুরের অভিজাত এলাকা নেতাজি সুভাষ অ্যাভিনিউর একটি আবাসনের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত পিউ মজুমদার (৩০) শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। স্ত্রীকে নির্যাতন ও আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ পেয়ে পুলিশ স্বামী রাজীব চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, পিউর বাপের বাড়ি বর্ধমানের তেলিপুকুরে। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে তাঁর সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের লক্ষ্মণপুরের যুবক রাজীবের বিয়ে হয়। তিনি হাওড়ায় একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। কর্মস্থলে যাতায়াতের সুবিধার জন্য ওই দম্পতি শ্রীরামপুর স্টেশনের অদূরে ওই আবাসনে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। তাঁদের বছর দেড়েকের একটি শিশুকন্যাও রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে পড়শিরা লক্ষ্মীপুজোর প্রসাদ দিতে গিয়ে দেখেন, তাঁদের ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পরেও কোনও সাড়া না মেলায় তাঁদের সন্দেহ হয়। তাঁরা শ্রীরামপুর থানায় খবর দেন। রাত ১২টা নাগাদ পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে পিউদেবীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে। বুধবার শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দেহের ময়না-তদন্ত করা হয়। পিউদেবীর ভাই রাজদীপ মজুমদার পুলিশের কাছে রাজীবের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে রাজীবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মৃতার বাপের বাড়ির লোকেরা জানান, গত সোমবার মেয়েকে নিয়ে ওই দম্পতি বর্ধমানে তাঁদের বাড়িতে যান। মেয়েকে সেখানে রেখে মঙ্গলবার দু’জনে শ্রীরামপুরে ফিরে আসেন। এ দিন রাজীব কাজে বেরিয়ে যান। পিউ ফ্ল্যাটে একাই ছিলেন।
মৃতার দিদির বক্তব্য, “মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টাতেও বোনের সঙ্গে কথা হয়েছে। রাজীব মদ খেয়ে প্রায়ই বোনের উপর শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার করত। সেই কারণেই ওকে মৃত্যুর পথ বেছে নিতে হল। আমরা রাজীবের কঠোর শাস্তি চাই।” বাপেরবাড়ির লোকের আরও অভিযোগ, রাজীবের সঙ্গে অন্য মহিলার সম্পর্ক ছিল। পিউ তা জেনে ফেলায় অশান্তি বেড়ে যায়। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজীব। তাঁর দাবি, “স্ত্রী আবেগপ্রবণ ছিল। ঘটনার রাতে আমার মোবাইল সুইচড্ অফ হয়ে যায়। তাই আমাকে ফোনে পায়নি। হয়তো সেই কারণেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy