বাঁশবেড়িয়ায় ৪ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী সিপিএম প্রার্থী। ছবি: সুশান্ত সরকার
লোকসভা ভোটের ফলে হুগলি শিল্পাঞ্চলের একটি বড় অংশে উজ্জীবিত হয়েছিল বিজেপি। তারপর থেকে অবশ্য তাদের ক্ষয় শুরু হয়। তবু, ১০ মাস আগে বিধানসভা ভোটে অনেক ওয়ার্ডেই তারা দ্বিতীয় স্থান দখলে রাখতে পেরেছিল। পুরভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, বহু ওয়ার্ডেই তারা তৃতীয়। বিধানসভার নিরিখে কিছুটা হলেও বামেরা শক্তি বাড়াতে পেরেছে।
তবে, পুরভোটের ফলকে আমল দিতে রাজি নয় বিরোধী শিবির। বিরোধী সব দলই একবাক্যে অভিযোগ করেছে, তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণে এই ফল।
২০১৫-র পুরভোটে হুগলির ১২টি পুরসভা মিলিয়ে বিজেপি ৬টি ওয়ার্ড (ভদ্রেশ্বর ও চাঁপদানিতে দু’টি করে এবং রিষড়া ও বাঁশবেড়িয়ায় একটি করে) জিতেছিল। গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে তারা এখানে ৪০টির বেশি ওয়ার্ডে তৃণমূলকে পিছনে ফেলে দিয়েছিল। এ বার তাদের ঝুলিতে ৪টি ওয়ার্ড (রিষড়ায় ২, ভদ্রেশ্বর ও আরামবাগে একটি করে)।
লোকসভা ভোটে হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টিতে এগিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল এগিয়েছিল ১৭টিতে। গোটা পুরসভা মিলিয়ে তৃণমূল অল্প কিছু ব্যবধানে এগিয়েছিল। বিধানসভা ভোটে অবশ্য ক্ষত মেরামত করে তৃণমূল। ২৯টি ওয়ার্ড তারা জিতেছিল। এ বারেও সেই ব্যবধান তারা ধরে রেখেছে। গত বিধানসভায় তারকেশ্বর পুর এলাকায় বিজেপির থেকে ১৫০০-র বেশি ভোটে এগিয়েছিল তৃণমূল। এ বার সেই ব্যবধান ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। বহু ওয়ার্ডেই বিজেপির ভোট অনেক কমেছে।
বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মোহন আদক বলেন, ‘‘গায়ের জোরে ভোট করেছে শাসক দল। মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। পারলে এই ফল হয় না।’’ একই বক্তব্য চুঁচুড়ার বিজেপি নেতা স্বপন পালের।
তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসার পরে সিপিএম নেতৃত্ব বলছেন, আরও একটু ভাল ফল তাঁরা আশা করেছিলেন। তা না হওয়ার পিছনে তৃণমূলের ‘দাদাগিরি’কে তাঁরা দায়ী করছেন। জেলা সিপিএম সম্পাদক দেবব্রত ঘোষের কথায়, ‘‘ফলাফল বিশ্লেষণ চলছে। তবে, শাসকের ছাপ্পা, অর্থ ও পেশিবল, নির্বাচন কমিশনকে তুড়ি মেরে ভোটের সময়েও সরকারি প্রকল্প নিয়ে মানুষের কাছে যাওয়া এই ফলের অন্যতম কারণ।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘আরামবাগ, তারকেশ্বর পুরসভার ভোট পুরোপুরি লুট হয়েছে। শ্রীরামপুর এবং বাঁশবেড়িয়ার কিছু ওয়ার্ডেও তাই হয়েছে। তবে, সামগ্রিক ভাবে বিধানসভার সাড়ে ১০ শতাংশ ভোটের থেকে অন্তত ৮ শতাংশ ভোট আমাদের বেড়েছে। আমাদের যে সব প্রার্থী জিতেছেন এবং যাঁরা হেরেছেন, প্রত্যেকেই আজ থেকেই রাস্তায় নেমে মানুষের পাশে থাকবেন।’’
বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন শ্রীরামপুর-হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি স্নেহাশিস রায়। জয়ী প্রার্থীদের তালিকা দেখিয়ে তাঁর দাবি, কিছু জায়গায় তৃণমূল হারলেও জিতেছেন নির্দল প্রার্থী, যাঁরা তৃণমূল থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রেও বিরোধীদের থেকে তাঁদের ভরসাযোগ্য বলে মানুষ মনে করেছেন। স্নেহাশিসের খোঁচা, ‘‘কুৎসা না করে, বিরোধীরা আত্মবিশ্লেষণ করুন।’’
কর্মসংস্থানের সমস্যার কথা মেনেও তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের সুফল মানুষের ঘরে পৌঁছে দেওয়া গিয়েছে। মানুষ আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন। সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের মাধ্যমে। রাজ্য সরকারের পাশে থাকতেই মানুষ শাসক দল ছাড়া অন্যদের কথা ভাবেনি। তাঁদের প্রাপ্ত ভোট ৬০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy