পঞ্চায়েতের সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
কান পাতলেই তাঁর নামে বিস্তর অভিযোগ শোনা যায় খানাকুলে। কিন্তু এতদিন কেউ থানা-পুলিশ করতে সাহস করেননি। রবিবার রাতে তৃণমূল পরিচালিত পোল-২ পঞ্চায়েতের প্রধান আসিক ইকবালের বিরুদ্ধে তোলা আদায় এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভয় দেখানোর অভিযোগ দায়ের হল। প্রধানের অপসারণের দাবিতে সোমবার সকালে পঞ্চায়েতে বিক্ষোভও দেখালেন কিছু গ্রামবাসী।
থানায় যিনি অভিযোগ জানিয়েছেন, তিনি ব্যবসায়ী শেখ আব্দুল হামিদ ওরফে বাবুলাল। তাঁর অভিযোগ, এক লক্ষ টাকা দিতে না-পারায় রবিবার সন্ধ্যায় চকভেদুয়ায় তাঁর ধান ব্যবসা কেন্দ্রে গিয়ে আসিক পিস্তল দেখিয়ে খুন এবং এলাকাছাড়া করার হুমকি দেন।
পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন আসিক। দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। দলও বিষয়টা দেখছে।”
খানাকুলের চকভেদুয়া গ্রামের কাটাখাল সংলগ্ন রাস্তার গায়ে একটি বাঁশের মাচা থেকে প্রধান তাঁর ‘রাজত্ব’ চালান বলে অভিযোগ ছিল। সেই মাচা থেকে কোনও কারণে ডাক পেলে সংশ্লিষ্ট তিনটি অঞ্চলের প্রায় পনেরোটি গ্রামের মানুষের ঘুম উবে যায়। আসিককে সকলে এতটাই ভয় পান।
ধান, বালি খাদ-সহ কিছু ব্যবসা আছে হামিদের। তিনি একজন রেশন ডিলারও। তিনি এ বার কোন সাহসে থানায় গেলেন?
হামিদের দাবি, আগে তিনি বহুবার প্রধানের টাকা চাওয়ার দাবি মিটিয়েছেন। বিধানসভা ভোটের আগে ৫ লক্ষ টাকার দাবি না মেটানোয় হুমকি চলছিল। সম্প্রতি এলাকায় একটি ভেড়ি করার পরে প্রধান ১০ লক্ষ টাকা দাবি করেন বলে তাঁর অভিযোগ। হামিদ বলেন, ‘‘ব্যবসা বাঁচাতে গত শনিবার প্রধানকে এক লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। তা দিতে না-পারায় হুমকি শুনতে হল। আর ধৈর্য রাখতে পারলাম না। তাই পুলিশকে জানাই।’’
প্রধানের পাল্টা দাবি, ‘‘পূর্ত দফতরের রাস্তা দখল করে অবৈধ নির্মাণ, বালি চুরি ইত্যাদি বেআইনি কাজ বাদ দিলেও ডিলার হিসেবে হামিদের ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে সরব হয়েছিলাম। দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করছিলাম। তাতেই এই মিথ্যা অভিযোগ।” হামিদ দুর্নীতির অভিযোগ মানেননি।
গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, হামিদ বুদ্ধিমান। আসিকের রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। দু’জনের যোগসাজশেই এতদিন পূর্ত দফতরের জায়গা দখল, বালি চুরি ইত্যাদি অনেক অপকীর্তি হয়ে এসেছে। সম্প্রতি এমন কিছু হয়েছে, যাতে জুটি ভেঙে গিয়েছে। তবে, তাঁদের যে সখ্যতা ছিল, তা অস্বীকার করেননি হামিদ বা আসিক— কেউই।
গ্রামবাসীরা এ দিন পঞ্চায়েতের সামনে বিক্ষোভ দেখানোয় অনেকের পরিষেবা পেতে অসুবিধার খবর পেয়ে পুলিশ এবং র্যাফ গিয়ে জমায়েত ছত্রভঙ্গ করে। প্রধানের দাবি, কিছু মানুষকে টাকাকড়ি দিয়ে এ সব করানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy