Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Alur Dom festival in Hooghly

এক দিকে পীরের মাজারে প্রার্থনা, অন্য দিকে গঙ্গার আরাধনা, সম্প্রীতির কেন্দ্র হুগলির ‘আলুর দমের মেলা’

বেশ কয়েক দশক ধরে মকর সংক্রান্তির দিনে জান্দা গ্রামে যে মেলা বসে, তা ‘আলুর দমের মেলা’ হিসেবেই পরিচিত। হুগলিবাসীদের কাছে প্রায় দু’শো-আড়াইশো বছরের পুরনো এই মেলা পরিচিত সম্প্রীতির মেলা হিসাবে।

মেলায় চলছে আলুর দম বেচাকেনা।

মেলায় চলছে আলুর দম বেচাকেনা। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
হুগলি শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:৪১
Share: Save:

বইমেলা, মিলন মেলা থেকে শুরু করে ফুলের মেলা, খাদ্য মেলা—হরেক রকম মেলার সম্ভার রয়েছে বাংলায়। কিন্তু ‘আলুর দমের মেলা’! এমন মেলার কথা কী কেউ কোথাও শুনেছেন? আজগুবি মনে হলেও সত্যি। পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে জমে উঠেছে হুগলির ‘আলুর দমের মেলা’। আর সেই মেলাতে যোগ দিতে সোমবার সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছেন হুগলির জাঙ্গিপাড়া থানার রাজবলহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের জান্দা গ্রামে।

বেশ কয়েক দশক ধরে মকর সংক্রান্তির দিনে জান্দা গ্রামে যে মেলা বসে, তা ‘আলুর দমের মেলা’ হিসেবেই পরিচিত। হুগলিবাসীদের কাছে প্রায় দু’শো-আড়াইশো বছরের পুরনো সেই মেলা পরিচিত সম্প্রীতির মেলা হিসাবে। এই মেলার এক দিকে চলে পীরের মাজারে মুসলিম ধর্মালম্বীদের প্রার্থনা। অন্য দিকে, একই চত্বরে আরাধনা করা হয় দেবী গঙ্গার।

জান্দা গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে দামোদর নদ। মকর সংক্রান্তির দিন বহু মানুষ দামোদরে পূণ্যস্নান সেরে মেলায় যোগ দেন। স্নান করার পর দিনের প্রথম খাবার হিসাবে নতুন তোলা আলু দিয়ে তৈরি আলুর দম এবং মুড়ি খান। আর সেই কারণেই এই মেলা পরিচিতি পেয়েছে ‘আলুর দমের মেলা’ নামে। মকর সংক্রান্তির দিন নতুন আলু দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের আলুর দম তৈরি করে মেলা প্রাঙ্গণে বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়াও মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের দোকানও বসে ওই মেলায়। আলুর দমের পাশাপাশি থাকে অন্যান্য খাবারের দোকানও।

মেলা উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এ বছরও প্রশাসনের তরফ থেকে একধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। মেলায় চুরি, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা এড়াতে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ মেলা প্রাঙ্গণে। ইতিমধ্যেই মেলা মাঠ পরিদর্শন করে গিয়েছেন হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লাল্টু হালদার। পঞ্চায়েতের তরফেও মেলায় আগতদের জন্য একাধিক সেবামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

মেলা প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা দিলীপ পাত্র বলেন, ‘‘শোনা যায়, এই মেলা যখন শুরু হয়, তখন কয়েক জন মাত্র দামোদরে স্নান করে এখানে আসতেন। খাবার হিসাবে আলুর দম এবং মুড়ি খেতেন। আস্তে আস্তে বড় হতে হতে এই মেলা ত বড় হয়ে গিয়েছে। দামোদরের তীরে আগে পীরের গান হত। বছর চল্লিশ হল এখানে গঙ্গা আরাধনাও শুরু হয়েছে। স্নান করে এসে সবাই আলুর দম খায় বলে আলুর দমের মেলা হিসাবে পরিচিত। তবে পুরনো আলুর দম কেউ খান না, সবাই নতুন আলুর দম খান।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hooghly Festival
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy