প্রাচীন দুর্গা মন্দিরে এই মূর্তিই (ইনসেটে) পুজো হয়। —নিজস্ব চিত্র।
গোঘাটের বালিদেওয়ানগঞ্জের রাউত পরিবারের শতাব্দী প্রাচীন দুর্গা পুজোর মূল আকর্ষণ প্রায় ৪০ ফুট উচ্চতার প্রাচীন স্থাপত্যের মন্দিরটি। দ্বারকেশ্বর নদ সংলগ্ন ‘দুর্গা মন্দির’ নামে খ্যাত ওই টেরাকোটা মন্দিরটি সম্প্রতি রাজ্য তথ্য সংস্কৃতি দফতরের প্রত্নতত্ত্ব ও সংগ্রহালয় অধিকার বিভাগের তত্ত্বাবধানে ২২ লক্ষ টাকায় সংস্কারও হয়েছে। ওই দফতরের হিসাবে মন্দিরটি আনুমানিক অষ্টাদশ শতকের শেষে নির্মিত। পুজোর বয়স তারও আগে বলে মনে করেন রাউত পরিবারের বংশধররা।
দেশের প্রাচীন মন্দিরগুলির মধ্যে এই দুর্গা মন্দিরটির গঠনশৈলী, অলঙ্করণ অন্যতম। আনুমানিক অষ্টাদশ শতকের শেষে নির্মিত মন্দিরটি দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ২২ ফুট। উচ্চতা প্রায় ৪০ ফুট। পূর্বমুখী ত্রিখালন অলিন্দযুক্ত ইটের তৈরি এই নবরত্ন মন্দিরটি জোড়বাংলা মন্দিরের উপর নির্মিত। মন্দিরের প্রবেশ দ্বারের উপরে এবং কার্নিসের নিচে পাঁচটি শিখরযুক্ত চৌখুপির মধ্যে পোড়ামাটির ফলকে সজ্জিত রয়েছে দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশের মূর্তি। এছাড়া মন্দিরের প্রবেশ পথের দুই পাশের দেওয়ালে পোড়ামাটির ফলক সজ্জায় ধর্মীয় ও সামাজিক দৃশ্যাবলী, ত্রিখিলান অলিন্দের উপরে ও গর্ভগৃহে প্রবেশদ্বারের উপরে পঙ্খের অলঙ্করণও আকর্ষণীয়।
মন্দিরে শিব-দুর্গা মূর্তি পূজিত হয়। পুজো শুরু হয় মহালয়ার পরের দিন। চলে দশ দিন। প্রতি বছর তিন ফুট উচ্চতার মূর্তি বানানো হয়। ধাতুর সরু হয়ে যাওয়া দুর্গার নোয়া এবং শিবের ক্ষয়িষ্ণু শিঙ্গাটি পুজোর সময় বের করা হয় বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। পুজোর আড়ম্বর একটা ঢাক এবং একটা মাইক। আর তিনটে পাঁঠা বলি হয়।
রাউত পরিবারের বর্তমান সদস্যদের মধ্যে গোবিন্দ রাউত বলেন, ‘‘পরিবার এখন ৪০ ঘরে ভেঙেছে। আমরা কাঁসা-পিতলের ঘড়া শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। এই শিল্প তো বিলুপ্তির মুখে। তাই বিশেষ আয় না থাকায় প্রতি বছর ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার মধ্যেই বাজেট রাখা হয়।’’ তিনি জানান, সারা বছর বহু মানুষ মন্দিরের কারুকাজ দেখতে এবং ছবি তুলতে আসেন। এটাও কম গর্বের নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy