Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Renovation Work

সংস্কার হোক ‘গান্ধী ঘর’, দাবি উঠেছে কামারপাড়ায়

শচীন্দ্রলালের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৯৬০ সালে তৈরি হয় ‘গান্ধী ঘর’। এটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রমাপ্রসাদ চৌধুরী।

বেহাল এই ভবনের সংস্কারের দাবি উঠেছে।

বেহাল এই ভবনের সংস্কারের দাবি উঠেছে। — নিজস্ব চিত্র।

বিশ্বজিৎ মণ্ডল
বলাগড় শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৩ ০৭:২৪
Share: Save:

এক সময়ে গ্রামের উন্নতি কী করে করা যায়, সেই আলোচনা হত এই ঘরে বসে। উপরের তলায় গ্রন্থাগারে ভিড় জমাতেন গ্রামের বাসিন্দারা। বলাগড়ের মহীপালপুর পঞ্চায়েতের কামারপাড়ার সেই ‘গান্ধী ভবন’ এখন জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে। প্রায় তেইশ বছর কারও পা পড়ে না এই বাড়িতে। গ্রন্থাগারের বইও কেটেছে পোকায়। বহু বছর ধরে ওই ভবন সংস্কারের তুলছেন বাসিন্দারা। কিন্তু সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। এ বার পঞ্চায়েত ভোটের মুখে সেই দাবি জোরদার হয়েছে।

সম্প্রতি বিডিও নীলাদ্রি সরকার ভবনটি পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই ভবনের সঙ্গে ইতিহাস জড়িয়ে। এর সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। নিশ্চয়ই কিছু একটা ব্যবস্থা করা হবে।’’

ভবনটির মূল পরিকল্পনা ছিল বৈঁচির বাসিন্দা তথা ভারতীয় সেনাবাহিনীর চিকিৎসক শচীন্দ্রলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ১৯৪৩ সাল নাগাদ স্বদেশ সেবার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে ‘আরামবাগের গান্ধী’ প্রফুল্লচন্দ্র সেনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। শচীন্দ্রনাথের স্বপ্ন ছিল ‘আদর্শ গ্রাম’ গঠনের। সেই অনুযায়ী, মহীপালপুর পঞ্চায়েতের কামারপাড়া গ্রামকে বেছে নিয়েছিলেন শচীন্দ্রলাল। গ্রামে বিদ্যালয় গড়ে তোলেন। চিকিৎসাকেন্দ্র ও ডাকঘরের ব্যবস্থাও তাঁর হাত ধরে।

শচীন্দ্রলালের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৯৬০ সালে তৈরি হয় ‘গান্ধী ঘর’। এটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রমাপ্রসাদ চৌধুরী। দ্বারোদ্ঘাটন করেছিলেন নৃতাত্ত্বিক নির্মলকুমার বসু। এই ভবনে এসেছেন স্বাধীনতা সংগ্রামী বৃন্দাবনচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ভূপতি মজুমদারের মতো ব্যক্তিত্বরা। ভবনের পাশের মাঠে এক সময়ে বসত কুটিরশিল্পের মেলা। গ্রন্থাগারে ছিল অনেক বইয়ের সম্ভার। নীচের ভবনে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করতেন পঞ্চায়েতের কর্তারা।

১৯৮০ সাল নাগাদ ধীরে ধীরে গ্রন্থাগারে ভিড় কমতে থাকে। দেখভালের অভাবে ভবনটি জরাজীর্ণ হতে শুরু করে। এখন ধুলোর পাহাড়ে ঢেকেছে স্মৃতি। যা নিয়ে এলাকাবাসীর আক্ষেপ কম নেই। স্থানীয় বাসিন্দা মাধব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ভবনে বসে বিপ্লবী ভূপতি মজুমদার বলেছিলেন, ‘দেখো, গান্ধীজীর নামের এই ঘর যেন ছাগলের আশ্রয়ের জায়গা না হয়!’ আদতে কিন্তু তাই হল। জানলা-দরজা ভেঙে পড়ছে। ওটাকে বাঁচানো বড় প্রয়োজন।’’

মহীপালপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান সৌরভ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক পার্থ চট্টোপাধ্যায় ওই ভবন ঘুরে দেখে গিয়েছেন। কামারপাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কামারপাড়ার ইতিহাস নিয়ে একটি প্রদর্শনী ঘর তৈরির দাবি উঠেছে। দেখা যাক, কী করা যায়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Renovation Work Balagarh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy