Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Anis Khan

Rampurhat Clash: রামপুরহাট-কাণ্ডের পর আমরাও ভয় পাচ্ছি: আনিসের বাবা

হাই কোর্টের নির্দেশমতো সিট আনিসের দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করায়।

সিসিক্যামেরায় চোখ সালেম খানের। ছবি: সুব্রত জানা

সিসিক্যামেরায় চোখ সালেম খানের। ছবি: সুব্রত জানা

নুরুল আবসার
আমতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২২ ০৬:৪১
Share: Save:

বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন থাকে ২৪ ঘণ্টাই। তারপরেও নিজেদের ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ কিছুদিন আগে তাঁরা বাড়িতে পাঁচটি সিসিক্যামেরা লাগিয়েছেন। কিন্তু রামপুরহাট-কাণ্ড ভয়ের মাত্রা বাড়াল আমতার মৃত ছাত্র-নেতা আনিস খানের পরিবারে।

বৃহস্পতিবার আনিসের দাদা সাবির বলেন, ‘‘রামপুরহাটের ঘটনা প্রমাণ করে এই রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বলে আর কিছুই নেই। কোথাও শাসক দলের মদতপুষ্ট অপরাধীরা, আবার কোথাও পুলিশ শাসক দলের একাংশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একের পর এক খুন করছে। কোনও ঘটনায় আসল অপরাধীরা ধরা পড়ছে না। রামপুরহাটে যে ভাবে বাড়িতে আগুন দিয়ে আট জনকে পুড়িয়ে মারা হল, তাতে আমাদের আর নিরাপত্তা কোথায়? আনিস খুন হওয়ার পর আমাদেরও হুমকি দেওয়া হয়। ভাবছি আমাদেরও না রামপুরহাটের মতো পরিণতি হয়!’’

একই সুরে আনিসের বাবা সালেম খানও বলেন, ‘‘দুঃসহ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। ছেলেকে খুনের ঘটনায় দোষীরা তো ধরা পড়লই না, উল্টে রামপুরহাট-কাণ্ড বুঝিয়ে দিয়েছে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা কী অবস্থায় আছে। আমরাও ভয় পাচ্ছি।’’

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে আমতার সারদা গ্রামের বাসিন্দা আনিসের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। তারপরেই সালেম নিরাপত্তার প্রশ্ন তোলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বসানো হয় হাইমাস্ট আলো। প্রথম থেকেই পুলিশের উপরে তাঁদের আস্থা না-থাকার কথা জানিয়েছিলেন আনিসের পরিবারের লোকেরা। তাঁরা পুলিশের বিরুদ্ধেই আনিসকে খুনের অভিযোগ তোলেন। তাই পুলিশি নিরাপত্তায় ভরসা না-রেখে গত ২০ মার্চ নিজের বাড়িতে সিসিক্যামেরা লাগান সালেম।

সাবির বলেন, ‘‘বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন থাকলেও আমাদের ভরসা নেই। তাই বাড়িতে সন্দেহজনক লোকের আনাগোনার উপরে নজর রাখতে সিসিক্যামেরা বসিয়েছি। আমি নিজে তো বটেই, পরিবারের সকলেই সর্বক্ষণ মনিটরে চোখ রাখি।’’

আনিসের অপমৃত্যুর তিন দিন পরে মুখ্যমন্ত্রী সিট গঠন করে পনেরো দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেন। তদন্তে নেমেই সিট আমতা থানার এক হোমগার্ড এবং এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করে। বসিয়ে দেওয়া হয় আমতা থানার তৎকালীন ওসিকে। তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়ার জন্য কলকাতা হাই কোর্টে যে মামলা হয়, তার রায়ে মার্চ মাসের তিন তারিখে হাই কোর্ট জানিয়ে দেয়, সিট-ই তদন্ত করবে। আদালত সিটকে কিছু বিশেষ নির্দেশও দিয়ে পনেরো দিনের মধ্যে তদন্ত-রিপোর্ট পেশ করতে বলে। সেই সময়সীমা মেনে গত ১৬ মার্চ হাই কোর্টে তদন্ত-রিপোর্ট জমা দেয় সিট।

এর মধ্য হাই কোর্টের নির্দেশমতো সিট আনিসের দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করায়। আনিসের মোবাইল ফোন কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠায়। আনিসের মৃত্যুর পরে যে মোবাইল থেকে আমতা থানায় ফোন করা হয়েছিল, সেটিও সিট নিজেদের হেফাজতে নেয়। ধৃতদের ‘টিআই প্যারেড’ করায়। হুমকির ঘটনায় পুলিশ এক জনকে গ্রেফতার করে।

গত ১৯ মার্চ সিটের তদন্ত-রিপোর্টের উপরে হাই কোর্টে শুনানি হয়। সিট তদন্ত শেষ করতে আরও এক মাস সময় চায়। হাই কোর্ট তাদের সময় দিয়ে জানায়, আগামী ১৮ এপ্রিল পরবর্তী শুনানি হবে।

আনিসের পরিবার আপাতত ১৮ এপ্রিলের অপেক্ষায় আছে। সালেম বলেন, ‘‘হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে সিটকে সব রকম সহায়তা করেছি। কিন্তু সিট কী করছে সে বিষয়ে অন্ধকারে রয়েছি। সিবিআই তদন্ত ছাড়া আমার ছেলের খুনের তদন্ত হবে না। কারণ, পুলিশ নিজে যেখানে অভিযুক্ত, সেখানে তারাই যদি তদন্ত করে তা সঠিক হবে কী করে? হাই কোর্ট শেষ অবধি কী করে, সেটা দেখেই পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Anis Khan Rampurhat Murder Rampurhat Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy