ফ্ল্যাটে ঢোকার আগে তালা ভাঙছে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।
হুগলির হিন্দমোটরে রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া। তিন দিন ধরে মায়ের দেহ আগলে বসে ছেলে। পরিচারিকা দুর্গন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীদের ডাকতে গেলে তাঁকেও ঘরে আটকে রাখার অভিযোগ। পরে পুলিশ তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেহ উদ্ধার করে। মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হিন্দমোটরের ১ নম্বর বিএন দাস রোডে একটি আবাসনে থাকতেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী কল্যাণী হাজরা। ছেলে বছর ৩৫-এর শুভ্রদীপও থাকতেন মায়ের সঙ্গেই। শুভ্রনীল মানসিক ভারসাম্যহীন। ওই ফ্ল্যাটেই পরিচারিকার কাজ করেন গীতা দাস। গত দু’দিন তিনি কাজে আসেননি। শনিবার কল্যাণীদেবীর ফ্ল্যাটে বেল বাজান। আর পাঁচটা দিনের মতো কল্যাণী দরজা খোলেননি। তার বদলে ছেলে শুভ্রদীপ দরজা খোলেন। বাড়িতে ঢুকতেই পচা দুর্গন্ধ পান গীতা। দেখেন, খাটে পড়ে রয়েছে কল্যাণীর নিথর দেহ। দেখেই গীতা বুঝতে পারেন, প্রাণ নেই দেহে। যদিও ছেলে দাবি করেন, ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমোচ্ছেন মা!
বেগতিক দেখে গীতা প্রতিবেশীদের ডাকতে যান। কিন্তু তাঁকে বেরোতে দিতে চাননি শুভ্রদীপ বলে অভিযোগ। গীতা ভয় পেয়ে চিৎকার শুরু করলে কল্যাণীর ছেলে দরজা খুলে দেন ঠিকই কিন্তু গীতা বেরিয়ে যেতেই আবার দরজায় খিল এঁটে দেন শুভ্রদীপ। কিছু ক্ষণের মধ্যে প্রতিবেশীদের জড়ো করেন গীতা। কিন্তু দরজা খোলেননি শুভ্রদীপ। গীতার সন্দেহ, দিনদু’য়েক আগেই মৃত্যু হয়েছে কল্যাণীর। খবর পেয়ে ফ্ল্যাটে পৌঁছন স্থানীয় কাউন্সিলর প্রবীর কংস বণিক। তিনিই পুলিশে খবর দেন। কাউন্সিলর জানান, এলাকার মানুষের সঙ্গে সে ভাবে মেলামেশা করতেন না কল্যাণী। ছেলের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল না কারও। আশপাশে আত্মীয়স্বজন থাকলেও তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখতেন না মা, ছেলে। শুভ্রদীপের অসুস্থতার খবরও আগে জানা যায়নি বলে দাবি কাউন্সিলরের।
এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় উত্তরপাড়া থানার পুলিশ। পুলিশ প্রথমে ডাকাডাকি করে। কিন্তু শুভ্রদীপ দরজা খোলেননি। তার পর দরজার তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়ে পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। শুভ্রদীপকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy