দোকান মালিক গোবিন্দ চৌধুরী (বাঁ দিকে), কাউন্সিলর শুভাশিস চৌধুরী (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
আদালতের রায়কে বিকৃত করার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার সকালে হুগলির কোন্নগর থেকে ওই প্রৌঢ়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। দোকানঘর খালি করাতে তিনি আদালতের রায় বিকৃত করেছিলেন বলে অভিযোগ। আদালত ধৃতকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
গোলমালের সূত্রপাত একটি দোকান ঘরকে কেন্দ্র করে। কোন্নগর পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শুভাশিস চৌধুরী কয়েক বছর আগে একটি দোকান ঘর ভাড়া নেন জনৈক গোবিন্দ চোধুরীর কাছ থেকে। গোবিন্দের অভিযোগ, চুক্তি শেষ হলেও দোকান ঘর ছাড়ার নাম করছিলেন না কাউন্সিলর। এক বছর ধরে শুভাশিস দোকানের ভাড়াও বকেয়া রেখেছেন বলে অভিযোগ। এ নিয়ে আইনি টানাপড়েনও চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। অভিযোগ, গত ৫ সেপ্টেম্বর দোকানের বাইরে একটি ম্যাজিস্ট্রেটের নোটিস লাগিয়ে দোকানে রাখা সমস্ত মালপত্র বাইরে বার করে দেন গোবিন্দ। সে কথা জানতে পেরে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন শুভাশিস।
শুভাশিসের অভিযোগ, যে ম্যাজিস্ট্রেটের অর্ডারকে হাতিয়ার করে দোকান মালিক বলপূর্বক দোকান খালি করেছিলেন, সেই অর্ডারটি অবৈধ এবং তাতে রায়ের হেরফের ঘটানো হয়েছে। যে দোকান খালি করে দেওয়ার কথা হচ্ছিল সেই দোকানের চাবি মাস কয়েক আগেই তিনি হস্তান্তর করেছিলেন দোকান মালিককে বলেও দাবি শুভাশিসের। তিনি বলেন, ‘‘গোবিন্দবাবু যে অভিযোগগুলি করছেন, তা সর্বৈব মিথ্যা। সমস্ত নথি আমার কাছে আছে। ওঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছি। ম্যাজিস্ট্রেটের রায়কে উনি বিকৃত করে আমার মালপত্র সমস্ত রাস্তায় ফেলে দিয়েছেন। তাতে আমার অনেক মাল খোয়া গিয়েছে। আদালত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার রায় দিয়েছিল। কিন্ত ওঁর কত সাহস যে রায়কে বিকৃত করে এ সব করেন!’’
পুলিশ সূত্রে খবর, আদালতের রায় ছিল স্থিতাবস্থা বজায় রাখার। ১৪৪ ধারা জারি করার কথা বলা ছিল। অভিযোগ, সেই রায়কে বিকৃত করে গোবিন্দ দোকান থেকে মালপত্র বাইরে বার করে দেন। সেই অভিযোগেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দোকানের মালিকের বাড়ির লোকেদের কাছ থেকে এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও গ্রেফতারির আগে গোবিন্দের সঙ্গে কথা বলেছিল সংবাদমাধ্যম। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘‘গত এক বছর ধরে দোকানের চাবি আমাকে দিয়েছে ঠিকই কিন্তু মাল বার করেনি। আমি দোকান অন্য কাউকে ভাড়াও দিতে পারছি না। তাই আমি কোর্টে গিয়েছিলাম। কোর্ট থেকে রায় দিয়েছে, ১৪৪ সিআরপিসি লাগানোর। আমাকে বলেছে, মাল বার করে দাও। যদি পুলিশ আসে তাহলে পুলিশের কাছে যাবেন। আমি পুলিশের কাছে গিয়েছিলাম কিন্তু তিনি ছিলেন না। তাই আমি দুপুরে মাল বার করে দিয়েছি। এক বছর ধরে ভাড়া দেয়নি। আমার সংসার চলবে কী করে?’’
ওই প্রৌঢ়কে শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy