মা সোনিয়া মাঝি । নিজস্ব চিত্র।
পনেরো দিনের শিশুকন্যাকে খুনের অভিযোগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে গ্রেফতার করা হয়েছিল তার বাবা, শ্যামপুরে মরশাল গ্রামের তেঁতুলতলার বাসিন্দা সায়ক মাঝিকে। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত। কথাবার্তায় অসঙ্গতি থাকায় শুক্রবার সকালে গ্রেফতার করা হল শিশুটির মা সোনিয়াকে।
কী কারণে খুন, তা এখনও পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে। ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, জানার চেষ্টা চলছে। তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু বলতে চাননি ওই পুলিশকর্তা।
গত বছর ২৪ অগস্ট মধ্যরাতে সোনিয়ার চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় পাশে শুয়ে থাকা সায়ক, পাশের ঘরে থাকা সায়কের বাবা শৈবালবাবু, মা সুমিত্রাদেবী এবং পড়শিদের। সোনিয়া দাবি, করেন, মেয়ে আরাধ্যাকে নিয়ে তিনি ঘুমোচ্ছিলেন। মেয়ে উধাও। পরের দিন ভোরে বাড়ি থেকে দেড়শো ফুট দুরে পুকুরে আরাধ্যার দেহ ভাসতে দেখা যায়।
সোনিয়া পুলিশের কাছে অভিযোগে জানান, মেয়েকে ঘর থেকে অচেনা কোনও ব্যক্তি তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করে পুকুরের জলে ফেলে দেয়। পুলিশ তদন্তে নামে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের ধারণা হয়, ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় ঘটনায় পরিবারের কেউ জড়িত। সে দিনই সায়ক ও শৈবালবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেন তদন্তকারীরা। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। শিশুটির পারলৌকিক কাজ মিটে যাওয়ার পর বারে বারে পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন তদন্তকারীরা। ১৮ দিন পর সায়কের কথায় অসঙ্গতি পেয়ে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।
এ বার আরাধ্যার মাকে গ্রেফতার করা হল কেন?
তদন্তকারীরা জানান, সায়কদের দোতলা পাকা বাড়ি। পরিবারে মোট চার জন সদস্য। নীচের তলায় কেউ থাকেন না। দোতলার একটি ঘরে সায়ক তাঁর স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে থাকতেন, আর একটি ঘরে তাঁর বাবা-মা থাকেন। এত দিন ধরে বারবার পরিবারের সকলকে এবং পড়শিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ফের সোনিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে তাঁর কথাবার্তাতেও অসঙ্গতি মেলে।
শুক্রবারই সোনিয়াকে উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
সায়ক কলকাতায় একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশোনা করতেন। শিলিগুড়ির বাসিন্দা সোনিয়ার সঙ্গে তাঁর ফেসবুকে পরিচয় হয়। ঘটনার বছর দেড়েক আগে তাঁদের বিয়ে হয়। তাঁরা কলকাতায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন। গত বছর লকডাউন ঘোষণার মাসতিনেক আগে দম্পতি শ্যামপুরে চলে আসেন। পনেরো দিন পর আরাধ্যার জন্ম হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy