মাস্কহীন ভাবে অবাধে ঘোরাঘুরি। আরামবাগের চাঁদুর এলাকায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
গত কয়েক দিনে লাফিয়ে বেড়েছে করোনা। তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কায় চিকিৎসা ব্যবস্থা ঢেলে সাজছে স্বাস্থ্য দফতর। ভাইরাসের হানাদারিতে জনজীবনে ফের বেড়ি পরবে কি না, মেহনতি মানুষ কাজ হারাবেন কি না, স্কুলে আবার তালা পড়বে কি না, তা নিয়ে চর্চা চলছে। স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু নতুন বছরের প্রথম দিন দুই জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলি দেখে অবশ্য সম্ভাব্য ‘বিপজ্জনক’ পরিস্থিতি বোঝার উপায় ছিল না। যাবতীয় বিধি উপেক্ষা করে এক শ্রেণির মানুষ ভিড় করে হুল্লোড়ে মাতলেন। সেই ভিড় অকুতোভয়, বেপরোয়া। মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি রক্ষার বালাই নেই।
পরিস্থিতি দেখে চিকিৎসকদের একাংশ উদ্বিগ্ন। তাঁদের বক্তব্য, সমাজের কথা ভেবে প্রত্যেক নাগরিককে সতর্ক হতে হবে। না হলে ফের করোনায় ভোগান্তি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের স্থবির অবস্থা ফিরতে পারে।
শনিবার, বছরের পয়লা তারিখে হাওড়ার মহিষরেখায় গিয়ে দেখা গেল, দামোদরের পাড়ে বনভোজনের দলের থিকথিকে ভিড়। কার্যত কেউই মাস্ক পরে নেই। দূরত্ববিধি উধাও। একই অবস্থা ফুলেশ্বর সেচবাংলো সংলগ্ন মাঠ, শ্যামপুরের গড়চুমুকেও। তবে, চড়ুইভাতি করতে আসা লোকজন এখানে থার্মোকল ব্যবহার করেননি। কাগজের পাতা ও প্লেটে খাওয়া-দাওয়া করেছেন। কিন্তু করোনাবিধি মানার বালাই ছিল না। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘করোনা বিধি নিয়ে সর্বত্র মাইকে প্রচার করা হয়েছে।’’ তবে, তাতে জনতার হেলদোল ছিল না বলে তিনি মানছেন। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েক দিনে হাওড়ায় করোনা সংক্রমণ অনেক বেড়েছে।
হুগলির গোঘাটের গড় মান্দারণ, আরামবাগের চাঁদুর, খানাকুলের রাজা রামমোহন রায়ের বাগানে বনভোজনের দলের ভিড় উপছে পড়ে। কল্পতরু উৎসব উপলক্ষে কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকাতেও প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। পুলিশ-প্রশাসন মাইকে ধারাবাহিক প্রচার করলেও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি বলে অভিযোগ।
পিকনিকের ভিড় ছিল দামোদর, দ্বারকেশ্বর, মুণ্ডেশ্বরী এবং রপনারায়ণের পাড়েও। মাঠে-ঘাটেও হয়েছে পিকনিক। করোনা পরিস্থিতি ফের কু-ডাক দিচ্ছে, পরিস্থিতি দেখে মালুম হয়নি। সিংহভাগ লোক মাস্ক পরার সতর্কতা দেখাননি। গা-ঘেঁষাঘেষি ভিড়েই চলেছে হুল্লোড়, ডিজে চালিয়ে নাচ। মদ্যপানও রোখা যায়নি। গোঘাটের পচাখালিতে মদ খাওয়া নিয়ে একটি চড়ুইভাতি দলের লোকেরা নিজেদের মধ্যে মারামারিতে জড়ান। গোলমাল থামাতে গিয়ে অন্য একটি দলের এক সদস্য তথা স্থানীয় যুবক প্রহৃত হন। এই ঘটনায় ৩ জনকে পুলিশ আটক করেছে।
এসডিপিও (আরামবাগ) অভিষেক মণ্ডল বলেন, “মাইকে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রচার ছাড়াও শিবির করে মাস্ক বিতরণ করেছে পুলিশ। মদ্যপান এবং দুর্ঘটনা এড়াতে নজরদারি ছিল।’’
পান্ডুয়ার ডিভিসি পাড়, দাবড়া পার্ক, মহানাদের দিঘির পাড়, বলাগড়ের সবুজ দ্বীপেও ভিড় উপছে পড়ে। এই সব জায়গাতেও যথারীতি স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি।
শহরাঞ্চলে ব্যান্ডেল চার্চ, ইমামবাড়া প্রভৃতি পর্যটন কেন্দ্রেও বহু মানুষ ছিলেন মাস্কবিহীন। কারও মাস্ক থুতনির নীচে শোভা পেয়েছে। কারও আবার পকেটে। পুলিশ
অবশ্য জনতাকে সতর্ক করেছে। মাস্ক না পরায় ব্যান্ডেল চার্চ এবং ইমামবাড়া এলাকা থেকে ৬ জনকে তারা আটক করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy