দু’বছর ধরে শ্যামপুরের শিবগঞ্জে আধুনিক জেটিঘাট তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। কিন্তু এখনও জমি না মেলায় গঙ্গার উল্টো পারে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নৈনান ফেরিঘাটে জেটি তৈরি হয়নি। ফলে, পরিকল্পনা থাকলেও চালু করা যায়নি লঞ্চ পরিষেবা। ভুটভুটিতেই চলছে নদী পারাপার। নৈনানে জেটি কবে তৈরি হবে, তা নিয়ে যাত্রীরা যেমন প্রশ্ন তুলছেন, তেমনই বিকল্প হিসেবে শিবগঞ্জ-নুরপুরের মধ্যে লঞ্চ চালানোর দাবি তুলেছেন।
শিবগঞ্জ ফেরিঘাট হাওড়া জেলা পরিষদের অধীন। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তাপস মাইতি বলেন, "নৈনানের জেটিঘাটটিও তৈরি হওয়া দরকার। সেই জায়গা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের অধীন। ওখানে জেটিঘাট না হওয়ায় লঞ্চ চালানো যাচ্ছে না।’’ জেটিঘাটটি করার কথা পরিবহণ দফতরের। দফতরের এক কর্তা জানান, মামলার কারণে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ জমির ব্যবস্থা করতে পারেনি। জমি মিললেই জেটি তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে।
শিবগঞ্জ ও নৈনান ফেরিঘাট দিয়ে হুগলি নদী পার হয়ে হাওড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মধ্যে বহু মানুষ প্রতিদিন নানা কাজে যাতায়াত করেন। লঞ্চ পরিষেবা না থাকায় ভুটভুটিই সম্বল। এই এলাকায় হুগলি নদী বেশ চওড়া। ফলে, ভুটভুটিতে করে নদী পারাপার বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। সেই কারণে সাধারণ মানুষ দাবি তুলেছিলেন, দুই ফেরিঘাটের মধ্যে লঞ্চ চালাতে হবে। সেই দাবি মেনে নেয় জেলা পরিষদ ও পরিবহণ দফতর। সেই মতো শিবগঞ্জে জেটিঘাট করে দেয় পরিবহণ দফতর। খরচ হয় প্রায় এককোটি টাকা।
নৈনানে জেটিঘাট না হওয়ায় যাত্রীদের দাবি, আপাতত শিবগঞ্জ থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনারই নুরপুর পর্যন্ত লঞ্চ পরিষেবা চালু করার জন্য। কারণ, নুরপুরে জেটিঘাট আছে। হাওড়া জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, শিবগঞ্জ থেকে নুরপুর পর্যন্ত লঞ্চ পরিষেবা চালু করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। পরিবহণ দফতরের হয়ে শিবগঞ্জের জেটিঘাটটি নির্মাণ করেছে হুগলি রিভার্স ব্রিজ কমিশনার (এইচআরবিসি)। হাওড়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ জানান, এইচআরবিসি যাতে জেলা পরিষদকে জেটিঘাটটি হস্তান্তর করে সে জন্য তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘হস্তান্তর হয়ে গেলেই নুরপুর পর্যন্ত প্রথমে পরীক্ষামূলক ভাবে লঞ্চ চালানো হবে। যদি দেখা যায়, যাত্রীদের কাছ থেকে ভাল সাড়া মিলছে, তা হলে পাকাপাকি ভাবেই এই রুটে লঞ্চ চালানো হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)