টিকার লাইন। খানাকুলে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। নিজস্ব চিত্র।
এক জেলা পেল। পড়শি জেলার হাত খালি।
কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণামতো দেশজুড়ে সার্বিক টিকাকরণ (১৮ বছরের ঊর্ধ্বে) কর্মসূচি চালু হয়েছে সোমবার থেকে। হাওড়াতে তা মসৃ্ণ ভাবে সম্পন্ন হলেও পাশের জেলা হুগলিতে ধাক্কা খেল ওই কর্মসূচি। শুধু তা-ই নয়, হুগলির একাধিক কেন্দ্রে এ দিন টিকাকরণই কম হয়েছে। ভ্যাকসিনের জোগান পর্যাপ্ত না-থাকাতেই এই পরিস্থিতি বলে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলির দাবি।
রবিবার রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, ভ্যাকসিনের ঘাটতির জন্য এখনই সার্বিক প্রতিষেধক দেওয়ার কর্মসূচি চালানো সম্ভব নয়। আরও কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে। হুগলি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, সর্বজনীন টিকাকরণ রাজ্যের নির্দেশে স্থগিত করা হয়েছে। ভ্যাকসিনের জোগান যেমন মিলছে, সেই অনুযায়ী টিকা দেওয়া হচ্ছে। কর্মসূত্রে অনেকের সঙ্গে মিশতে হয়, অর্থাৎ, যাঁদের সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি (সুপার স্প্রেডার), এমন লোকজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ১৮ বছরের বেশি হলেই ভ্যাকসিন মিলছে। এ দিনও এ ভাবেই বিভিন্ন কেন্দ্রে টিকাকরণ হয়েছে।
তবে, ভ্যাকসিনের জোগান বাড়ায় হাওড়ায় কোনও সমস্যা হয়নি বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানায়। হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘আজ জেলায় ২০ হাজার জনের টিকাকরণ হয়েছে।’’ এত দিন এই সংখ্যা গড়ে ১০ থেকে ১৩ হাজারের মধ্যে থাকছিল বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
হুগলিতে টিকাকরণের ক্ষেত্রে রিষড়া পুরসভা প্রথম দিকে রয়েছে। কিন্তু, সোমবার এখানেও টিকাকরণ বন্ধ ছিল। পুরসভা সূত্রের খবর, ভ্যাকসিন বাড়ন্ত থাকায় এই অবস্থা। আজ, মঙ্গলবারেও এখানে টিকাকরণ হবে কিনা, সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন। বৈদ্যবাটীর পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র (১)-এ এ দিন মাত্র ৪৫ জন দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন। সিঙ্গুর ব্লকের বিঘাটি পঞ্চায়েতের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গত ১৭ দিন ভ্যাকসিনের দেখা নেই। পঞ্চায়েত প্রধান দীপক পাকিরা বলেন, ‘‘কবে টিকা দেওয়া হবে, জানা নেই।’’ গোঘাট-১ এবং ২ ব্লকে এ দিন টিকা প্রায় বাড়ন্ত ছিল। জনাপঞ্চাশকে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়ার পরেই ‘ভ্যাকসিন নেই’ বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। সর্বসাধারণের টিকাকরণ নিয়ে প্রশ্নে জেলার একটি পুরসভার এক আধিকারিকের জবাব, ‘‘ভ্যাকসিনই নেই, তো ১৮ বা ৮০!’’
হুগলিতে সার্বিক টিকাকরণ প্রথম দিনই হোঁচট খাওয়ায় বিজেপি-তৃণমূল চাপান-উতোরও শুরু হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে সর্বসাধারণের জন্য টিকাকরণের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি দিয়ে। টিকার ঘাটতিতে সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতারা। বৈদ্যবাটীর পুর-প্রশাসক তথা চাঁপদানির তৃণমূল বিধায়ক অরিন্দম গুঁইনের খোঁচা, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর বাত যত সব মনে। কাজে নয়। আজ ভ্যাকসিনের অভাবে টিকাকরণ হয়নি বললেই চলে।’’
এ দিন উত্তরপাড়ায় শ’পাচেক লোক টিকা পেয়েছেন। পুরপ্রশাসক তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবের বক্তব্য, ‘‘শোনা যাচ্ছে, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে তৃতীয় ঢেউ আসছে। তার আগে যত বেশি সম্ভব টিকাকরণ করা উচিত। দৈনিক দেড় হাজার লোককে টিকা দেওয়ার পরিকাঠামো পুরসভার আছে। কিন্তু তত ভ্যাকসিন কোথায়! কেন্দ্র টিকার জোগান বাড়াক।’’ একই বক্তব্য রিষড়ার পুর-প্রশাসক বিজয়সাগর মিশ্রেরও।
তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় পরিস্থিতির দায় রাজ্য সরকারের উপরে চাপিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, কত ভ্যাকসিন প্রয়োজন কেন্দ্রকে তা রাজ্য জানাচ্ছে না। কেন্দ্রকে হেয় করতেই এটা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy