প্রার্থী বদলের দাবিতে আরামবাগের ব্লকপাড়ায় তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মহিলাদের। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
দলের টিকিট না-পেয়ে হুগলির একাধিক পুরসভায় ‘নির্দল’ হিসেবে মঙ্গলবার মনোনয়ন জমা দিলেন তৃণমূলের ‘বিদ্রোহী’রা। একই কারণে হাওড়ার উলুবেড়িয়া পুরসভার একটি আসনেও বিদায়ী এক মহিলা কাউন্সিলর ‘নির্দল’ হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
তৃণমূলের বিতর্কিত প্রথম তালিকায় নাম ছিল হুগলির উত্তরপাড়া-কোতরংয়ের প্রাক্তন কাউন্সিলর সত্যেন ঘোষের। চূড়ান্ত তালিকায় তিনি বাদ পড়েন। ক্ষুব্ধ সত্যেন ‘নির্দল’ হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে দাঁড়াচ্ছেন। ওই ওয়ার্ডেই একাধিক বার তিনি কাউন্সিলর ছিলেন। এই পুরসভায় এ দিন মোট ৮ জন বিক্ষুব্ধ ‘নির্দল’ প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন পুরপ্রধান পিনাকী ধামালিও। সত্যেন বলেন, ‘‘আরও কয়েকটি ওয়ার্ডে আমরা প্রার্থী দেব। সেই কাজ চলছে।’’
বৈদ্যবাটীতেও কয়েক জন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা-কর্মী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আজ, বুধবার আরও কয়েক জন দিতে পারেন বলে তৃণমূল শিবিরের খবর। তৃণমূলের যুবনেতা দেবরাজ দত্ত ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ‘নির্দল’ হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর বাসুদেব ঘোষ। বাসুদেবকে দল এ বার প্রার্থী করেনি। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে গত বার ‘নির্দল’ হিসেবে জিতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ রায়। তিনিও তৃণমূলের টিকিট পাননি। তিনি জানান, আজ, বুধবার ‘নির্দল’ হিসেবে মনোনয়ন জমা দেবেন। ২১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের পরিচিত মুখ সঞ্জীব দে ‘নির্দল’ প্রার্থী হিসাবে দেওয়াল লেখা শুরু করেছেন। ৪, ১১, ২০ নম্বর ওয়ার্ডেও বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীরা ‘নির্দল’ হিসেবে দাঁড়াচ্ছেন বলে খবর।
আরামবাগের তৃণমূল নেতা শেখ মোসারফ হোসেন জানান, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর স্ত্রী লুৎফার বেগম নির্দল হিসেবে দাঁড়াবেন। এ দিন মনোনয়নপত্র তোলা হয়েছে। এ দিন আরামবাগে ৬ জন তৃণমূল প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। তার আগে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের জেলা সভাপতি রামেন্দু সিংহরায়। বৈঠক চলাকালীন ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী বদলের দাবিতে কিছু তৃণমূল কর্মী বিক্ষোভ দেখান। সভাপতি অবশ্য জানিয়ে দেন, চূড়ান্ত তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরাই টিকিট পাবেন।
কয়েক মাস আগে কোন্নগরের পুরপ্রশাসকমণ্ডলী থেকে বাদ পড়েছিলেন বিদায়ী পুরপ্রধান বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়। দল তাঁকে টিকিটও দেয়নি। মঙ্গলবার তিনি কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। গতবার তৃণমূলের টিকিটে জেতা ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই তিনি লড়বেন। এই পুরসভায় এ দিন কংগ্রেস ২০টি ওয়ার্ডে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
উলুবেড়িয়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সলর কাজি মনোয়ারা বেগমকে এ বার প্রার্থী করেনি দল। তিনি এ দিন ‘নির্দল’ প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। মঙ্গলবার কয়েকশো লোক নিয়ে মিছিল করে শাসক দলের নেতাদের নামে জয়ধ্বনি দিতে দিতে তিনি উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা দিতে যান। এই ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী করেছে হাফিজুর রহমানকে। মনোয়ারা জানিয়ে বলেন, ‘‘দলের বিরুদ্ধে আমার কোনও ক্ষোভ নেই। যাঁকে দল প্রার্থী করেছে, তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ। জিতে তৃণমূলে যোগ দেব।’’
হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক অরুণাভ সেন বলেন, ‘‘দল নির্দল প্রার্থীদের অনুমোদন দেয় না। কে কার নামে জয়ধ্বনি দিলেন, তাতে দলের কিছু যায় আসে না। দলীয় প্রতীক নিয়ে যাঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, দলীয় কর্মীরা তাঁদের সঙ্গেই আছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy