কাল, রবিবার রথযাত্রা। সব কিছু ঠিক থাকলে বিকেল ৪টেয় টান পড়বে মাহেশের রথের রশিতে। ৬২৮ বছরের প্রাচীন যে রথযাত্রার মাহাত্ম্য পুরীর পরেই। এই উপলক্ষে মাহেশে যথারীতি মেলা বসেছে। সেজে উঠছে রথ। সাজো সাজো রব মন্দির প্রাঙ্গণ জুড়ে।
জগন্নাথ মন্দিরের সামনে থেকে জিটি রোড ধরে ভক্তের দল রথ টেনে নিয়ে যাবেন মাসির বাড়িতে। যা দেখতে, রথের রশি ছুঁতে ভিড় করেন অগণিত মানুষ। রথটানের সময় বহু ভক্ত রথের উপরে কলা ছোড়েন। সেই কারণে অনেকেই মাথায় ছোট ঝুড়ি নিয়ে ছোট ছোট কলা বিক্রি করতে আসেন। এ বারেও নিশ্চয়ই যথারীতি কলা বিক্রির ধুম পড়বে। এই মাহেশের রথযাত্রাই তো ‘রথ দেখা, কলা বেচা’ প্রবাদের উৎস। একই যাত্রায় দু’টি কাজ একসঙ্গে করে ফেলা বোঝাতে যে প্রবাদ আজও লোকের মুখে ফেরে।
কিন্তু কেন রথ দেখার সঙ্গে কলা বিক্রি জুড়ে গেল?
হুগলির শ্রীরামপুরের কাছে বড়া, চণ্ডীতলা, নগায় একসময়ে প্রচুর পান চাষ হত। অসংখ্য পানের বরজ দেখা যেত রাস্তার ধারে। তবে, এখন আর আগের মতো পানের চাহিদা নেই। তবুও বারাণসীর শতকরা ৯৫ ভাগ পান যায় এখান থেকে। আঞ্চলিক প্রধান শস্য দেবতাকে উৎসর্গ করার প্রথা ভারতের প্রায় সর্বত্র রয়েছে। বিখ্যাত মাহেশের রথযাত্রার সময় অনেকেই প্রভু জগন্নাথকে পান উৎসর্গ করেন।
সেটা করেন কলার সঙ্গে পান বেঁধে রাস্তা থেকে রথের দিকে ছুড়ে। সে কারণেই এখনও অনেকে রথের
দিন কলা বিক্রি করতে আসেন।
কেউ কেউ কলার সঙ্গে লাল সুতো দিয়ে পান বেঁধেও বিক্রি করেন।
তা ছাড়া, ছোট চাঁপাকলা বা চিনি কলাও এখানে বেশ ভালই
চাষ হয়।
শ্রীরামপুর থেকে বারাণসীতে পান যায় দুন এক্সপ্রেসে। তবে, পান দু’এক দিনের বেশি বদ্ধ অবস্থায় রাখা যায় না। তাই দূরপাল্লার বেশির ভাগ ট্রেন কর্ড লাইন দিয়ে চালানো হলেও দুন এক্সপ্রেসকে শ্রীরামপুর দিয়ে, অর্থাৎ, মেন লাইন দিয়ে চালানো হয়। কারণ, একদিন পান পাঠানো বন্ধ মানেই সব পান নষ্ট।
তথ্য ও ছবি: দেবাশিস মুখোপাধ্যায়, প্রাবন্ধিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy