মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আগেই পুজোর অনুদান বয়কট করেছে উত্তরপাড়ার তিনটি ক্লাব। এ বার সেই তালিকায় নাম জুড়ল কোন্নগরের মাস্টারপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির। সেখানে অনুদান প্রত্যাখ্যান করলেন এলাকাবাসীরা। জানালেন, প্রতিবাদ করলে যদি পরের বছর অনুদান না-ও মেলে, তাতে আটকে থাকবে না পুজো!
হুগলির কোন্নগরের মাস্টারপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এলাকাবাসীদের সঙ্গে মিটিংয়ের পর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ স্বরূপ এ বার পুজোর অনুদান নেবে না তারা। এই মর্মে শুরু হয়েছে প্রচারও। টোটোয় মাইক বেঁধে, ফ্লেক্স লাগিয়ে অনুদান বয়কটের কথা প্রচার করছেন পুজো কমিটির সদস্যেরা।
পুজো কমিটির এমনই এক সদস্য সোমা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উৎসব পরে, আগে আমাদের সম্মান। আমরা মহিলারা যারা বাইরে কাজ করি, কিংবা বাড়িতে থাকি, আমাদের প্রত্যেকের সম্মানের সঙ্গে আমাদের পরিবারের সম্মানও জড়িয়ে থাকে। এখন সেই সম্মানেই আঘাত লেগেছে। আমরা দোষীর শাস্তি চাই। সেই সঙ্গে চাই আমাদের সকলের নিরাপত্তা।’’
আর এক সদস্য কমল মুখোপাধ্যায়ের গলাতেও একই সুর। তিনি জানাচ্ছেন, মিটিংয়ে এক জন মানুষও বলেননি তাঁরা অনুদানের পক্ষে। সকলে এক জোটে অনুদান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কমল বলেন, ‘‘প্রতিবাদ করলে যদি পরের বছর অনুদান না-ও মেলে, তাতে আটকে থাকবে না পুজো! আমরা অনুদানের ভরসায় পুজো করি না। এ পাড়ায় থাকেন প্রায় ৩৫০ পল্লিবাসী। পুজো ঠিকই হয়ে যাবে। কিন্তু আগে বিচার চাই।’’
এর আগে পুজোর সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছে হুগলির আরও তিন ক্লাব। সেই তিনটি ক্লাব হল: উত্তরপাড়ার মহিলাদের পুজো বৌঠান সঙ্ঘ, উত্তরপাড়া শক্তি সঙ্ঘ এবং আপনাদের দুর্গাপুজো-র। উত্তরপাড়ার তিন ক্লাবই জানিয়ে দিয়েছে, এ বার তারা সরকারি আনুকূল্যে পুজো করবে না। তারা আগে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার বিচার চায়। ইতিমধ্যে এই মর্মে চিঠিও পাঠানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছে।
উল্লেখ্য, তৃণমূল সরকার প্রতি বছর দুর্গাপুজো কমিটিগুলোকে আর্থিক সাহায্য করে। প্রথম দিকে আর্থিক অনুদানের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার টাকা। বাজারদরের কথা মাথায় রেখে প্রতি বছরই সেই আর্থিক অনুদানের পরিমাণ কিছুটা করে বৃদ্ধি করা হয়। গত বছর এই অনুদানের অঙ্ক ছিল ৭০ হাজার। চলতি বছর পুজো কমিটিগুলিকে ৮৫ হাজার টাকা করে সরকারি আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার সেই অনুদান প্রত্যাখ্যানের পথে হাঁটছে রাজ্যের চার ক্লাব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy