ঘটনার আগে মোট চার বার হাসপাতাল চত্বরে ঢুকেছিলেন আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত! অভিযোগ, ঠান্ডা মাথায় ধর্ষণ-খুনের পরেও এক মহিলাকে ফোন করে তাঁর সঙ্গে অভব্যতা করেন তিনি। এ বার এমনই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল তদন্তে।
ঘটনার তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআইয়ের একটি সূত্রে মঙ্গলবার জানা গিয়েছে, ঘটনার আগের দিন সকাল থেকে পরের দিন ভোর পর্যন্ত মোট চার বার আরজি করে যান অভিযুক্ত। তার মধ্যে এক বার গিয়েছিলেন আর এক সিভিক ভলান্টিয়ার বন্ধুর সঙ্গে! সেই বন্ধুর কোনও পরিচিত আরজি করে ভর্তি ছিলেন। তাঁকে দেখতে যাওয়ার অছিলাতেই বন্ধুর সঙ্গে হাসপাতালে ঢোকেন তিনি। এ ছাড়াও চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুন হওয়ার আগে আরও দু’বার নানা অজুহাতে আরজি কর চত্বরে গিয়েছিলেন অভিযুক্ত।
আরও পড়ুন:
সিবিআই সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ঘটনার পর এক ‘দিদি’কে ফোন করেন অভিযুক্ত। ‘দিদি’ বলে সম্বোধন করলেও তাঁর সঙ্গেও নাকি ফোনে অভব্যতা করেন তিনি। ঘটনার আগের রাতের সিসিটিভি ফুটেজ বলছে ৮ অগস্ট রাত ৮টা নাগাদ এক বার হাসপাতাল থেকে বেরোন ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার। যান চেতলার এক যৌনপল্লিতে। সেখান থেকে ফেরার পথে শম্ভুনাথ পণ্ডিত স্ট্রিটে আরও একটি মেয়েকে উত্ত্যক্ত করেন তিনি!
গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চারতলায় সেমিনার হলে চিকিৎসকের রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে সে দিন রাতেই সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে লালবাজারে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। আরজি কর-কাণ্ডে ধৃত পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার। অতীতেও মহিলাদের সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করার ‘রেকর্ড’ রয়েছে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের। নিজের পাড়াতেও মহিলাদের উত্ত্যক্ত করা, তোলাবাজি ইত্যাদি নানা অভিযোগ রয়েছে তাঁর নামে।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, আরজি করে চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গত মঙ্গলবার সিবিআইকে তদন্তভার দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। সে দিন রাতেই মামলা সংক্রান্ত নথিপত্র হস্তান্তরিত হয়। বুধবার সকালে দিল্লি থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের একটি বিশেষ দল। মামলার নথিপত্রের পাশাপাশি ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকেও হেফাজতে নেয় তারা।
ইতিমধ্যেই দফায় দফায় জেরা করা হয়েছে ধৃতকে। ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করাতেও সক্রিয় হয়েছে সিবিআই। সূত্রের খবর, সোমবার ওই লাই-ডিটেক্টর পরীক্ষার অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন সিবিআই আধিকারিকেরা।