দোকানের সামনে আরতি। — নিজস্ব চিত্র
করোনা সংক্রমণের জেরে তাঁর কাজ কমে গিয়েছিল। রবিবার থেকে বন্ধই হয়ে গেল।
নানা কিসিমের চাবি বানিয়ে সংসার চালাচ্ছিলেন চুঁচুড়ার তালডাঙার বাসিন্দা, বছর পঁয়তাল্লিশের আরতি পাল। দুই ছেলেকে নিয়ে থাকেন। এ বার খাবেন কী তাঁরা?
‘‘এ তো পেটে তালা পড়ার উপক্রম হল!’’— সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধের কড়াকড়িতে আর কাজে বেরোতে না-পেরে আরতির গলায় উদ্বেগ।
দীর্ঘদিন আগে স্বামী মারা যান। ৩৫ বছর ধরে চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড় সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার ধারে বসে চাবি তৈরির কাজ করে যাচ্ছিলেন আরতি। সংসারের কাজ সেরে বেলা ১০টা বাজলেই সাইকেল চালিয়ে চলে আসতেন ‘কর্মস্থলে’। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা— রোজই। রবিবার এলেন না। যদি পুলিশ ধরে!
সরকারি-বেসরকারি অফিসের সিন্দুক-আলমারি থেকে কারও মোটরবাইকের বা দোকান-রেস্তরাঁর শাটারের— হেন চাবি নেই, যা আরতি বানান না। গত বছর করোনার প্রথম পর্বে লকডাউনের জেরে প্রায় সাত মাস কর্মহীন ছিলেন আরতি। ছেলেরা দিনমজুরি করেন। তাঁদেরও প্রায় কাজ ছিল না।
‘‘গত বছর লকডাউনের সময়ে কার্যত অর্ধাহারে থাকতে হয়েছে আমাদের তিন জনকে। পরে অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হলে কঠিন পরিশ্রম করে সংসারের হাল ফেরাচ্ছিলাম। আবার যে এমন দিন আসবে, ভাবতে পারিনি। করোনা বাড়তে থাকায় বাড়িতে ডাক পড়া প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। তবু কিছু মানুষ ঘড়ির মোড়ে এসে চাবি তৈরির বরাত দিচ্ছিলেন। এ বার সব বন্ধ। কী করে সংসা্র চলবে জানি না।’’
চুঁচুড়ার বাসিন্দা রত্না বসু একবার বন্ধ দরজা খুলতে না-পেরে ঘরে ঢুকতে পারছিলেন না। চাবি হারিয়ে ফেলেছিলেন। শরণাপন্ন হয়েছিলেন আরতির। রত্না বলেন, ‘‘ওই দিদির হাতের জাদুতে আমরা ঘরে ঢুকতে পেরেছিলাম। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওঁর মতো যাঁরা বিপদে পড়লেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের খাওয়া-পরার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy