দগ্ধ: বাড়ির পোড়া অংশ ঘুরে দেখাচ্ছেন গৌর ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার, সালকিয়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
বহু বছরের পুরনো, জরাজীর্ণ দোতলা বাড়ি। নীচের ঘরগুলিতে মজুত ছিল ভাঙা কাঠ, ডালপালা, রাস্তায় পড়ে থাকা আর্বজনা। হাওড়ার সালকিয়ায় অরবিন্দ রোডের পাশে একটি সরু গলির মধ্যে ওই বাড়ির একতলায় সোমবার মাঝরাতে আগুন লাগল। যার জেরে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই পরিবারের সদস্য এক মহিলার মানসিক সমস্যা রয়েছে। তিনি রাস্তা থেকে আর্বজনা কুড়িয়ে বাড়িতে জমিয়ে রাখেন। গত বছরও সেই আর্বজনার স্তূপে আগুন লেগেছিল। হাওড়া পুরসভার কাছে বাসিন্দারা দাবি জানিয়েছেন, অবিলম্বে ওই বাড়িটি থেকে যাবতীয় দাহ্য বস্তু ফেলে দিয়ে সেটিকে বিপজ্জনক হিসাবে ঘোষণা করা হোক। যদিও ওই পরিবারের বড় ছেলে দাবি করেছেন, বাড়িটি প্রোমোটিং করার জন্য গত এক বছর ধরে প্রোমোটারেরা চাপ দিচ্ছেন। মাঝেমধ্যে আসছে হুমকিও।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সালকিয়ার ওই বাড়িতে বাস করেন দুই ভাই গৌর ভট্টাচার্য ও নিতাই ভট্টাচার্য এবং তাঁদের এক বিবাহিতা বোন মমতা তাপসী। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ের পর থেকেই মমতা দুই দাদার সঙ্গে থাকেন। তাঁর মানসিক সমস্যা রয়েছে। সোমবার রাতে নিতাই বাড়িতে ছিলেন না। তিনি গঙ্গাসাগর গিয়েছিলেন রান্নার কাজে।
এলাকাবাসী জানান, রাত ২টো নাগাদ ওই বাড়ির একতলায় প্রথমে আগুন লাগে। বাড়িতে ভাঙা কাঠের টুকরো, ডালপালা-সহ বিভিন্ন আর্বজনা ভর্তি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়ায়। স্থানীয়েরাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গৌর এবং মমতাকে দোতলা থেকে উদ্ধার করেন। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন এসে প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই পরিবারটির জন্য গোটা পাড়া রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। গত বছরও একই ভাবে ওই আবর্জনায় আগুন লেগেছিল। সোমবার তার পুনরাবৃত্তির পরে বাসিন্দারা দাবি তুলেছেন, ভগ্নপ্রায় বাড়িটি বিপজ্জনক ঘোষণা করে অবিলম্বে ভেঙে দিক পুরসভা। এ ব্যাপারে তাঁরা গণস্বাক্ষর করে পুরসভায় আবেদনপত্র জমা দেবেন।
এলাকার এক বাসিন্দা সুমন ঘোষ বলেন, ‘‘ওই বাড়িটির পাঁচিল লাগোয়া আমাদের বাড়ি। সোমবার সারা রাত যে কী অবস্থায় কাটিয়েছি, বলার নয়। যে কোনও সময়ে আমাদের বাড়িতেও আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারত।’’
এ দিন সালকিয়ার ওই অগ্নিদগ্ধ বাড়িটিতে গিয়ে দেখা যায়, তখনও বিভিন্ন জায়গা থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। তারই মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন পরিবারের বড় ছেলে গৌর। তিনি বলেন, ‘‘বহু দিন ধরেই এলাকার কিছু প্রোমোটার বাড়ি ছেড়ে উঠে যাওয়ার জন্য আমাদের উপরে চাপ দিচ্ছেন, ভয় দেখাচ্ছেন। কিন্তু আমরা যাইনি। আমার বোনের মানসিক সমস্যা আছে ঠিকই, কিন্তু ও আগুন লাগায়নি। কী ভাবে বার বার আগুন লাগছে, বুঝতে পারছি না।’’
হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘বার বার আগুন লাগার বিষয়টা দমকলের দেখা দরকার। বাড়িটির ব্যাপারে এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কাউকে উচ্ছেদ করে তো বাড়ি ভেঙে দেওয়া যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy