Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Hooghly

‘মৃত্যুর অপেক্ষা করছি’, উত্তরপাড়ায় বাড়ির কর্তা মারা যেতেই ঘরবন্দি স্ত্রী, পুত্র এবং কন্যা! হুলস্থুল

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৪ ফেব্রুয়ারি অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী গগনবরণ মুখোপাধ্যায়ের। তার পর থেকেই নিজেদের বাড়িতে বন্দি করে ফেলেন মৃতের স্ত্রী, পুত্র, কন্যা।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ (এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে)।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:১৯
Share: Save:

পরিবারের অশীতিপর কর্তা গত হয়েছেন ২২ দিন আগে। বাড়ির একমাত্র রোজগেরে সদস্যের মৃত্যুর পর স্ত্রী, পুত্র এবং কন্যা নিজেদের ঘরবন্দি করে ফেললেন। আত্মীয়-প্রতিবেশীরা দীর্ঘ দিন তাঁদের দেখা না পেয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বিফল হন। শেষে এক আত্মীয় তাঁদের ফোনে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, তিন জনই মৃত্যুর জন্য ‘প্রস্তুত’ হচ্ছেন। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ওই বাড়িতে ছোটেন এলাকার কাউন্সিলর থেকে পুরসভার চেয়ারম্যান। শেষে বাড়ির দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয়েছে তিন জনকে। সোমবার এই ঘটনায় শোরগোল হুগলির উত্তরপাড়ার রাজেন্দ্র অ্যাভিনিউ এলাকায়।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৪ ফেব্রুয়ারি বয়সজনিত অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী গগনবরণ মুখোপাধ্যায়ের। তার পর থেকেই নিজেদের বাড়িতে বন্দি করে ফেলেন মৃতের স্ত্রী শ্যামলী মুখোপাধ্যায়, ছেলে সৌরভ মুখোপাধ্যায় এবং মেয়ে চুমকি মুখোপাধ্যায়। অনেক চেষ্টা করেও তিন জনের সঙ্গে গত কয়েক দিন কেউ যোগাযোগ করতে পারেননি। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, খাওয়া দাওয়া না করে তাঁরাও ক্রমশ মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়ছিলেন। খবর পেয়ে সোমবার স্থানীয় কাউন্সিলর উৎপলাদিত্য চট্টোপাধ্যায়, পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব পুলিশকে নিয়ে ওই বাড়িতে যান। এর পর মুখোপাধ্যায় বাড়ির দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয়েছে তিন জনকে। তিন জনের শারীরিক পরিস্থিতি শঙ্কাজনক বলে খবর। তাঁদের উত্তরপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এই ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।

মৃতের আত্মীয় বৈষ্ণবদাস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত ৪ ফেব্রুয়ারি শেষ বার কথা হয়েছিল ওদের সঙ্গে। গগনবাবুর মৃত্যুতে শোকাহত ছিলেন পরিবারের বাকি সদস্যেরা। কিন্তু এমনটা কেন করলেন বোঝা গেল না।’’ স্থানীয়োরা জানাচ্ছেন, মৃতের ছেলে এবং মেয়ের বয়স পঞ্চাশের কোঠায়। দু’জনেই অবিবাহিত। তাঁদের রোজগার বলতে তেমন কিছু নেই। গগনের মৃত্যুর পর স্ত্রী যাতে পেনশন পান, কয়েক দিন সে জন্য সরকারি অফিসে যাতায়াত ছিল তাঁদের। কিন্তু তার পর পরিবারের তিন জনের কাউকেই বাড়ির বাইরে দেখা যায়নি।

উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব জানান, পরিবারের এক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে বেশ কিছু দিন আগে। তার পর থেকে বাকি তিন সদস্য আর বাড়ির বাইরে বেরোননি। সবাই ঘরের দরজা বন্ধ করে ছিলেন। তাঁদের মধ্যে কেউ এক জন আত্মীয়কে ফোন করে জানান যে, সবাই মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছেন। তার পর ওই আত্মীয় স্থানীয় কাউন্সিলরকে ফোন করে বিষয়টি জানান। দিলীপ বলেন, ‘‘এলাকার কাউন্সিলর আমাকে জানান বিষয়টি। আমি পুলিশকে জানাই। পুলিশ এসে তালা ভেঙে তিন জনকে উদ্ধার করেছে। সকলকে উত্তরপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে চিকিৎসার জন্য। কী কারণে এই ঘটনা ঘটল, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hooghly Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE