(বাঁ দিকে) চন্দননগরে সন্দীপের শ্বশুরবাড়ি। সন্দীপ ঘোষ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
শুধু কলকাতা, হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনাই নয়, শুক্রবার সকালে হুগলিরও একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযানে নামল ইডি। সকাল ৭টা নাগাদ প্রথমে ইডির একটি দল চন্দননগরের পাদ্রিপাড়ায় মেরিমাঠ সংলগ্ন এলাকার একটি বাড়িতে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সেটি আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু তালাবন্ধ বাড়ির সামনে দীর্ঘ ক্ষণ ডাকাডাকির পরেও কেউ দরজা খোলেননি। তদন্তকারীরা গাড়ি ঘুরিয়ে চন্দননগর থেকে বৈদ্যবাটি চলে আসেন। সেখানে কুণাল রায় নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে গিয়েছেন ইডি আধিকারিকেরা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানেই চলছে তল্লাশি অভিযান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দীপের শ্বশুরের নাম রামকৃষ্ণ দাস। তবে তিনি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যেরা চন্দননগরের ওই বাড়িতে খুবই কম আসেন বলে জানা গিয়েছে। দোতলা ক্রিম রঙের বাড়িটির তালায় মরচে পড়েছে। সদর দরজার ভিতরে উঁকি মেরে দেখা যায়, উঠোনেও শ্যাওলা পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে যে, রামকৃষ্ণের পরিবার বর্তমানে কলকাতায় থাকে। জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় চন্দননগরের এই বাড়িতে তাঁরা আসেন।
সন্দীপের শ্বশুরবাড়ির সামনে কিছু সময় অপেক্ষা করার পর বৈদ্যবাটিতে যায় ইডির দলটি। সকাল ৯টা নাগাদ ইডির আধিকারিকেরা পৌঁছন বৈদ্যবাটির নার্সারি রোড এলাকায় কুণালের বাড়িতে। দীর্ঘ ক্ষণ ডাকাডাকির পরে দরজা খুলে দেন কুণাল নিজেই। প্রায় দু’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ওই বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছেন ইডির আধিকারিকেরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কুণাল কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তাঁর বাড়িতে ইডি অভিযানে আসায় অবাক স্থানীয় বাসিন্দারাও। কুণালের এক আত্মীয় সুবীর দাস বলেন, “উনি মেডিক্যাল লাইনে কাজ করতেন। এর বেশি কিছু জানি না।” প্রায় আট ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানোর পর দুপুর ৩টে নাগাদ কুণালের বাড়ি থেকে বেরোন ইডির আধিকারিকেরা। তল্লাশি অভিযানের বিষয়ে পরিবারের তরফে কেউ কথা বলতে চাননি।
শুক্রবার সকাল থেকেই একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযানে নেমেছে ইডি। সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ প্রথমে সন্দীপের বেলেঘাটার বাড়িতে যান ইডির আধিকারিকেরা। তবে বাড়ির গেট তালাবন্ধ থাকায় প্রথমে সিজিও কমপ্লেক্সে ফিরে যেতে হয় তদন্তকারীদের। পরে আবার সন্দীপের বাড়িতে যায় ইডি। তার পর সন্দীপের বাড়িতে ঢোকেন ইডির আধিকারিকেরা। এখনও সেখানে তল্লাশি অভিযান চলছে। বাড়ির বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের মোতায়েন করা হয়েছে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তের জন্যই তাদের এই তল্লাশি অভিযান।
হাওড়ায় তল্লাশি চলছে বিপ্লব সিংহ এবং কৌশিক কোলের বাড়িতে। তল্লাশি চলছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুভাষগ্রামে প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতেও। ইডির তদন্তকারীদের সঙ্গে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরাও। গত সোমবার সন্দীপের পাশাপাশি সিবিআই গ্রেফতার করেছিল চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বিপ্লবকেও। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, কৌশিক বিপ্লব-ঘনিষ্ঠ। বিপ্লবের সংস্থায় হিসাবরক্ষকের কাজ করতেন তিনি। অন্য দিকে, প্রসূন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর হিসাবে কাজ করতেন। ‘সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ’ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, আরজি কর-কাণ্ডের আবহে ওই হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদ থেকে সরিয়ে এই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজেই বদলি করা হয়েছিল সন্দীপকে। যদিও চিকিৎসকদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জেরে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে পারেননি তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy