সন্দীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
সিবিআইয়ের পর এ বার সন্দীপ ঘোষের দুয়ারে পৌঁছে গেল ইডিও। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ সন্দীপের বেলেঘাটার বাড়ির সামনে পৌঁছন ইডির আধিকারিকেরা। তবে দরজা বাইরে থেকে তালাবন্ধ থাকায় ভিতরে ঢুকতে পারেননি তাঁরা। কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করার পরে গাড়ি নিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে ফিরে যান তদন্তকারীরা। পরে ফের আসেন। কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করার পর খোলা হয় তালা। ৯টা ১৫ মিনিটে সন্দীপের বাড়ির ভিতরে ঢোকেন তদন্তকারীরা। বাইরে পাহারায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরাও। আরও তিন জনের বাড়িতে শুক্র সকালেই পৌঁছে গিয়েছে ইডি। চলছে তল্লাশি অভিযান। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তের জন্যই তাদের এই তল্লাশি অভিযান।
হাওড়ায় তল্লাশি চলছে বিপ্লব সিংহ এবংকৌশিক কোলের বাড়িতে। তল্লাশি চলছে সুভাষগ্রামে প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতেও। ইডির তদন্তকারীদের সঙ্গে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরাও। গত সোমবার সন্দীপের পাশাপাশি সিবিআই গ্রেফতার করেছিল চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বিপ্লবকেও। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, কৌশিক বিপ্লব-ঘনিষ্ঠ। বিপ্লবের সংস্থায় হিসাবরক্ষকের কাজ করতেন তিনি। অন্য দিকে, প্রসূন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর হিসাবে কাজ করতেন। ‘সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ’ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, আরজি কর-কাণ্ডের আবহে ওই হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদ থেকে সরিয়ে এই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজেই বদলি করা হয়েছিল সন্দীপকে। যদিও চিকিৎসকদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জেরে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে পারেননি তিনি।
আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সিবিআই এফআইআর করার পরে ইডির তরফে সন্দীপের বিরুদ্ধে ইসিআইআর করা হয়। টানা ১৫ দিন সিবিআইয়ের জেরার মুখোমুখি হওয়ার পর গত সোমবার সন্ধ্যায় আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন সন্দীপ। সন্দীপ, বিপ্লব ছাড়াও একটি ওষুধের দোকানের মালিক সুমন হাজরাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় সন্দীপের নিরাপত্তারক্ষী আফসর আলিকেও।
মঙ্গলবার আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালত সন্দীপ-সহ ধৃত মোট চার জনকে আট দিন সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। সিবিআই গ্রেফতার করার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে সন্দীপকে সাসপেন্ড করে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য ভবনের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, সন্দীপের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার তদন্তের প্রেক্ষিতেই এই পদক্ষেপ।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর থেকেই তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে নানা মহলে। তদন্তভার হাতে পাওয়ার পর গত ১৫ অগস্ট তাঁকে প্রথম বার তলব করে সিবিআই। সেই দিন হাজিরা দেননি সন্দীপ। পরদিন অবশ্য সল্টলেকের রাস্তা থেকে সিবিআইয়ের গাড়িতে ওঠেন তিনি। সেই গাড়িতে সিবিআইয়ের এক আধিকারিকও ছিলেন। সন্দীপ যান সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই দফতরে। তার পর থেকে ২৪ অগস্ট পর্যন্ত টানা ৯ দিন তাঁকে তলব করা হয় সিজিওতে। দৈনিক ১০ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সিবিআই দফতরে থাকতে হয়েছিল সন্দীপকে।
গত ২৫ অগস্ট সকালে সন্দীপের বেলেঘাটার বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআইয়ের একটি দল। ৭৫ মিনিট তাদের বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করিয়ে রাখার পর দরজা খোলেন সন্দীপ। ভিতরে ঢোকেন সিবিআই কর্তারা। ওই দিন সিবিআই তাঁর বাড়িতেই সন্দীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। এ ছাড়া, ওই হাসপাতালে আর্থিক অনিয়মের মামলার তদন্তভারও সিবিআইয়ের হাতে দিয়েছে আদালত। দু’টি মামলাতেই কেন্দ্রীয় সংস্থার জোড়া আতশকাচের নীচে ছিলেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ। আর্থিক অনিয়মের মামলায় ২৪ অগস্ট এফআইআরও করে সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy