জলমগ্ন খানাকুলের রাজহাটির ভীমতলা এলাকা। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
পঞ্চায়েত ভবনের দোতলার বারান্দা যেন নৌকা বাঁধার ‘ঘাট’!
সেখানে ব্লক অফিস থেকে নৌকা করে ত্রাণ নিয়ে আসছেন পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা। নৌকা বাঁধছেন। ত্রাণের বস্তা নামাচ্ছেন। তারপরে নৌকা সরাচ্ছেন।
এ ছবি দেখতে অভ্যস্ত বন্যাপ্রবণ খানাকুল। নতুন করে আর কোনও এলাকা প্লাবিত না-হলেও খানাকুল-২ ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েতে (মাড়োখানা, শাবলসিংহপুর, ধান্যগোড়ি, জগৎপুর ইত্যাদি) বৃহস্পতিবারেও দেখা গেল এ ছবি। জলের স্রোত কমলেও জলস্তর সে ভাবে কমেনি। তাই এ ভাবেই ত্রাণ আসছে পঞ্চায়েতে।
ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দিলীপ সানকি বলেন, “রূপনারায়ণ এখনও ভরে থাকায় জমা জল নামছে না বললেই চলে। আমরা জনপ্রতিনিধিরাই
ত্রাণ আনছি। পঞ্চায়েত কর্মীরা কেউ আসতে পারছেন না।” জল খুব ধীর গতিতে নামছে জানিয়ে বিডিও শঙ্খ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গ্রামগুলি সবই এখনও জলমগ্ন। তারই মধ্যে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। সেনাবাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও সাহায্য করছে।’’
খানাকুল-১ ব্লকেও এ ভাবেই ত্রাণ যাচ্ছে। প্রশাসন ত্রাণ পাঠানোর দাবি করলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ উঠছে। পানীয় জলের হাহাকারও শুরু হয়েছে। দুর্গতদের অভিযোগ, পানীয় জলের কল এবং গ্রামীণ জল সরবরাহ প্রকল্পগুলি জলমগ্ন হয়ে যাওয়ায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। পর্যাপ্ত পানীয় জল সরবরাহের পাশাপাশি সুষ্ঠু ভাবে ত্রাণ বণ্টনের জন্য সর্বদলীয় গ্রাম কমিটি করারও দাবি তুলছেন তাঁরা।
দুই ব্লক প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ত্রাণ বিলিতে পঞ্চায়েতগুলিকে সর্বদলীয় কমিটি করার কথা বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিদিন ৩০ হাজার করে পানীয় জলের পাউচ পাঠানো হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরও পৃথক ভাবে জল সরবরাহ করছে।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মহকুমা বাস্তুকার শোভন বিশ্বাস বলেন, “আমরা খানাকুলের রামনগরে ভ্রাম্যমাণ জল পরিশোধন ইউনিট এনেছি। সেখানে বন্যার জল পরিশোধন করে প্রতিদিন প্রায় ৬০-৭০ হাজার পাউচ তৈরি করে বিলি করা হচ্ছে।’’
সেচ দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দামোদর বিপদসীমার নীচে নেমে গিয়েছে। মুণ্ডেশ্বরীও প্রাথমিক বিপদসীমারও নীচে দিয়ে বইছে। দ্বারকেশ্বর নদ গত সোমবার থেকেই শান্ত। তবে, রূপনারায়ণে জল দ্রুত না-নামলে পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হবে না বলে জানিয়েছেন দফতরের চাঁপাডাঙা বিভাগের সহকারী বাস্তুকার
কার্তিক দাস।
আরামবাগ, গোঘাট এবং পুরশুড়ায় অবশ্য পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। জমা জল কিছুটা নেমে জমি জাগছে। ফের চাষ করা সম্ভব কিনা জানতে চাষিরা কৃষি দফতরের শরণাপন্ন হচ্ছেন। মহকুমা কৃষি আধিকারিক সজল ঘোষ জানান, যে সব ডুবে থাকা ধান গাছ এখনও বাঁচানো সম্ভব, সেখানে চাষিদের বিশেষ ছত্রাকনাশক এবং গাছের বৃদ্ধির জন্য ওষুধ ছেটানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া জলদি জাতের বীজ ফেলে যাতে চারা তৈরি করা যায় সেটাও দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy