প্রতীকী ছবি।
খোদ নিজের দলের বিরুদ্ধেই এ বার প্রতিষেধক নিয়ে রাজনীতির পাশাপাশি টাকা তোলার অভিযোগ করলেন হাওড়া পুরসভার প্রাক্তন মেয়র পারিষদ, তৃণমূলের সীমা নস্কর। তাঁর অভিযোগ, যে সমস্ত সাধারণ মানুষ ভোর ৫টা থেকে প্রতিষেধকের জন্য পুরসভার উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির সামনে লাইন দিচ্ছেন, তাঁরা প্রতিষেধক পাচ্ছেন না। কিন্তু যাঁরা দলের জেলা নেতৃত্বের কার্যালয় থেকে ‘কুপন’ নিয়ে আসছেন, তাঁদের প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে। সীমাদেবীর বক্তব্য, এই অন্যায় চলতে পারে না।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রতিষেধক শিবির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে সরিয়ে নেওয়ার পরেই নিজের এই ক্ষোভ উগরে দেন প্রাক্তন মেয়র পারিষদ। অভিযোগ, প্রায় পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জানানো হয়, প্রতিষেধক দেওয়া হবে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেলিলিয়াস লেনের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পরে প্রতিষেধক নিতে আসা লোকজনকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, যাঁরা কুপন নিয়ে এসেছেন, শুধু তাঁরাই প্রতিষেধক পাবেন। বাকিরা পাবেন না। কারণ, অত প্রতিষেধক নেই। এ কথা শোনার পরেই ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়ে
অপেক্ষমাণ জনতার একটি বড় অংশ। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। প্রতিষেধক নিতে আসা লোকজন প্রশ্ন তোলেন, পুরসভার পক্ষ থেকে শাসক দলের লোকেদের প্রতিষেধক দেওয়ার ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে। এটা হয় কী করে?
মঞ্জীরা সাউ নামে এক গৃহবধূ বলেন, ‘‘আমরা ভোর থেকে লাইন দেওয়ার পরে জানতে পারলাম, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিষেধক দেওয়া হবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও প্রতিষেধক পেলাম না। অথচ, পার্টি অফিস থেকে যাঁরা কুপন এনেছিলেন, তাঁরা প্রতিষেধক নিয়ে চলে গেলেন।’’ বিনীতা জৈন নামে এক প্রৌঢ়ার অভিযোগ, ‘‘আমি সংসারের কাজ ছেড়ে ভোর থেকে লাইন দিয়ে পাঁচ ঘণ্টা পরে জানতে পারলাম, কুপন না থাকায় প্রতিষেধক পাব না। আমি জানতে চাই, প্রতিষেধক নিয়ে কেন দলবাজি হবে?’’
১৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর সীমাদেবী বললেন, ‘‘প্রতিষেধক নিয়ে গোষ্ঠীবাজি চলছে। আমাদেরই দলের এক নেতার বাড়ি থেকে কুপন বিলি হচ্ছে। বাছাই করা লোকেদের তা দেওয়া হচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষ প্রতিষেধক পাচ্ছেন না।’’ তাঁর অভিযোগ, গোটা হাওড়া শহর জুড়েই এই কাণ্ড চলছে। এমনকি, প্রতিষেধকের জন্য দলের কর্মীরা ২০০-২৫০ টাকাও নিচ্ছেন বলে তাঁর অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিষেধক নিয়ে এই গোষ্ঠী রাজনীতি চলতে পারে না।’’
এ বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি এবং পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যে সমস্ত ওয়ার্ডে প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে, সেখানে কয়েক জন বর্ষীয়ান মানুষকে যাতে লাইনে দাঁড়াতে না হয়, তার জন্যই কুপন দেওয়া হয়েছিল। তাই কুপন দেখালেই প্রতিষেধক পাওয়া যাচ্ছে, এই অভিযোগ ঠিক নয়। টাকা নেওয়ার কোনও অভিযোগও আমরা পাইনি। তবুও সমস্ত অভিযোগই খতিয়ে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy