রক্তদান শিবিেরর প্রচারে পোস্টার। নিজস্ব চিত্র।
আসছে ২২ মে। গত বছর ওই দিনেই আমতার সারদা গ্রামের বাসিন্দা ছাত্রনেতা আনিস খান নিজের এলাকায় রক্তদান শিবির করতে চেয়েও পারেননি। কিছু স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মী তাঁকে বাধা এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিলেন বলে তিনি পুলিশ-সহ বিভিন্ন মহলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
এ বার আনিস নেই। কিন্তু ওই দিনেই আনিসের স্মৃতিতে সারদা শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছেন গ্রামবাসী। তাঁদের সঙ্গে আছে আনিসের পরিবার, তাঁর বন্ধুবান্ধব এবং যে সংস্থার উদ্যোগে গত বছর শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল, সেই জনস্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও অধিকার মঞ্চও। চলছে প্রচার।
গোটা গ্রাম তাঁদের সঙ্গে আছে জানিয়ে আনিসের দাদা সাবির বলেন, ‘‘ভাই রক্তদান শিবির করতে গিয়েই বাধার মুখে পড়েছিল। পুলিশ ওঁকে সুরক্ষা দিতে পারেইনি। উল্টে পুলিশের হাতে ওঁকে খুন হতে হয়। ভাইয়ের অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করতে এবং তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমরা গত বছর যে তারিখে ও রক্তদান শিবির করতে চেয়েছিল, সেই তারিখেই রক্তদান শিবির করতে চাইছি। বহু মানুষ রক্ত দেবেন।’’
কী বলছে তৃণমূল?
এলাকার দাপুটে নেতা তথা কুশবেড়িয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হাসু খানের দাবি, ‘‘কে বলেছে গতবার আমরা রক্তদান শিবিরে বাধা দিয়েছি? আনিসকে ভয় দেখানো বা তাঁদের বাড়ির সদস্যদের মারধর করা তো দূরের কথা, আমরা ওঁদের বাড়ির ছায়া মাড়াইনি।’’
তবে, হাসু স্বীকার করেন গত বার রক্তদান শিবিরকে কেন্দ্র করে আনিসের সঙ্গে বাদানুবাদ হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামের কয়েকজন বলেছিলেন, গ্রামে রক্তদান শিবির হচ্ছে বাগনানের একটি সংগঠনের নামে। এটা ঠিক হচ্ছে না। তা-ও যারা এইসব বলেছিল, তাদের সঙ্গে আমার বা তৃণমূলের কোনও সরাসরি সম্পর্ক ছিল না। রক্তদান শিবির করতে বাধাও দেওয়া হয়নি।’’
জনস্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও অধিকার মঞ্চের সম্পাদক অভীক নাগ পাল্টা বলেন, ‘‘বাজে কথা। বিবাদটা বাগনান বা সারদা নিয়ে ছিল না। আনিসকে সরাসরি হুমকি দিয়ে বলা হয়েছিল, নেতাগিরি করা হচ্ছে? এখানে কোনও ভাবেই রক্তদান শিবির করা যাবে না।’’
আনিস নিজেও গতবার রক্তদান শিবির বন্ধ করা নিয়ে যে অভিযোগ করেছিলেন, তাতে লিখেছিলেন, যেহেতু বিধানসভা ভোটে সারদা গ্রামে তৃণমূল কম ভোট পেয়েছে, তাই এখানে তাঁকে রক্তদান শিবির করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এই অভিযোগ অস্বীকার করে হাসুর দাবি, ‘‘কোনও দিনই আমরা রক্তদান শিবিরের বিরুদ্ধে নই। এ বারেও তো শিবির হচ্ছে। খুব ভাল কথা।’’ অভীক বলেন, ‘‘কারও চাওয়া না চাওয়ার উপরে এই শিবির নির্ভর করছে না। আমরা সকলে মিলে আনিসের অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করতে চাই। আনিসের মতোই মানুষের পাশে থাকতে চাই। তাই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে।’’
গত বছর করোনা পরিস্থিতি ছিল। তার উপরে গরমে রক্তের চাহিদা বাড়ায় আনিস ওই শিবির করতে চান। কিন্তু পারেননি। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে আনিসের অপমৃত্যু হয়। এই মামলার তদন্ত করছে সিট। কলকাতা হাই কোর্টে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে তারা। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে শুনানি চলছে। আনিসের পরিবার চাইছে, এই মামলার তদন্ত করুক সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy