নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই উত্তর হাওড়া বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে গৌতম চৌধুরীর নাম নেটমাধ্যম ও ফ্লেক্সে প্রচার করা শুরু হল। সালকিয়ার বিভিন্ন জায়গায়, ‘গৌতম চৌধুরীকেই আমরা উত্তর হাওড়ার প্রার্থী হিসাবে চাই’, এই বয়ানে ফ্লেক্স দেখা যায়।
বুধবার উত্তর হাওড়ার প্রাক্তন সিপিআইএম বিধায়ক লগনদেও সিংহ হুগলির ডানকুনিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জনসভায় সিপিএম ছেড়ে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। এরপর এই প্রচার ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপড়েন। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, অবাঙালি ভোটারদের মন জয় করতে লগনদেও সিংহকে উত্তর হাওড়ায় তৃণমূল প্রার্থী করা হতে পারে। আর এ নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে শুরু হয়েছে জল্পনা ও ক্ষোভ। মুখে না বললেও উত্তর হাওড়ার তৃণমূল কর্মী ও প্রাক্তন কাউন্সিলররা লগনদেও সিংহকে দলে নেওয়া ভালো চোখে দেখছেন না। এই কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে গৌতম চৌধুরীকে টিকিট দেওয়া হোক বলে দাবী তুলেছেন তাঁরা।
উত্তর হাওড়া কেন্দ্রের ৪ বারের বিধায়ক এবং হাওড়া পুরসভার এক বারের কাউন্সিলর লগনদেও সিংহের কথায় কার্যত ‘বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেত’। সিটু নেতা হিসাবে হাওড়া স্টেশনের নীল কুলি সংগঠন, সংবাদপত্র বিক্রেতাদের সংগঠন এবং হুগলী নদী জলপথ পরিবহন সমিতির একচ্ছত্র দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম তাঁকে টিকিট দেয়নি। এরপর থেকেই তাঁর সঙ্গে দলের দূরত্ব বাড়তে থাকে। দীর্ঘদিন কোনও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানেও তাঁকে দেখা যায়নি। যদিও তাঁর স্ত্রী এবং হাওড়া পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর মিনা সিং ২০১৭ সালে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। লগনদেও সিংহ বলেন, তাঁর রাজনৈতিক জীবনে বরাবরই তিনি কংগ্রেস বিরোধী ছিলেন। সিপিএম এ বারে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করায় এবং সাম্প্রদায়িক বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, কাজের মানুষ হিসাবে দল যে দায়িত্ব দেবে, তাই তিনি পালন করবেন। সে ক্ষেত্রে দল যদি তাঁকে টিকিট দেয়, তাহলে তিনি লড়তে প্রস্তুত।
আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে ঠান্ডা লড়াই। হাওড়া পুরসভার প্রাক্তন মেয়র পরিষদ সদস্য এবং উত্তর তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক প্রেসিডেন্ট গৌতম চৌধুরী দীর্ঘদিন সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। লগণদেও সিংহের দলে যোগদান নিয়ে তিনি বলেন, ‘কে এল, কে গেল, তা নিয়ে বিশেষ ফারাক হবে না। তাঁর যোগদানের খবর তিনি টিভি দেখে জেনেছেন। তাঁদের সঙ্গে কেউ এ ব্যাপারে আলোচনা করেননি। তবে পরিস্থিতি আর আগের মতো নেই। তাই উত্তর হাওড়া কেন্দ্রে প্রার্থী হিসাবে লগনবাবুর নাম ঘোষণা হলে কর্মীদের কী প্রতিক্রিয়া হবে, তা তিনি জানেন না।
উল্লেখ্য গত বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর হাওড়া কেন্দ্রে থেকে লক্ষ্মীরতন শুক্ল ২৮হাজার ভোটে জেতেন। তারপর থেকেই গৌতম চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে ওই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রায় ৩ হাজার ভোটে পিছিয়ে আছে। এর জন্য তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে দায়ী বলে মনে করা হয়। ওই কেন্দ্রে অবাঙালি ভোটের আধিক্য থাকায় অবাঙালি প্রার্থীকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। যদিও গৌতম চৌধুরীর বক্তব্য, তাঁরা সারা বছর মানুষের সঙ্গে আছেন। তাই অবাঙালি ভোটাররা তাদের কাছের মানুষ। তাঁদের ভোট পেতে অসুবিধা হবে না।
অন্য দিকে লগনদেও সিংহ বলেন, ‘‘গৌতম চৌধুরীর সঙ্গে আমার দাদা ও ভাইয়ের সম্পর্ক।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy