উলুবেড়িয়ার একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র।
ডিম-আনাজের দাম বেড়েছে। কিন্তু টাকা কই?
হাওড়া জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি টাকা পাচ্ছে না দু’মাস ধরে। ফলে, খাবারের জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কেন্দ্রের কর্মীরা। এমনকি, জেলার বেশ কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খাবার দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে।
বাগনানের একটি অঙ্গনওযাড়ি কেন্দ্রের এক কর্মী জানান, তিনি একটি মুদিখানার দোকান থেকে ডিম কেনেন। কিন্তু টাকা না আসায় তিনি ডিমের দাম মেটাতে পারছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘দাম দিতে পারছি না বলে দোকানদার আর ডিম দিতে চাইছেন না। কোনওমতে তাঁকে বুঝিয়ে ডিম নিতে হচ্ছে।’’ উলুবেড়িয়ার একটি কেন্দ্রের এক কর্মী বলেন, ‘‘আনাজের দাম বাড়ছে। এ দিকে, কেনার টাকাও পাচ্ছি না। দুইয়ে মিলিয়ে কেন্দ্র চালাতে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে পড়ছি।’’
করোনা-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পরে পুরোদমে চালু হয়ে গিয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি। অন্তঃসত্ত্বা, সদ্য মা হয়েছেন এমন মহিলা এবং শিশুদের দেওয়া হচ্ছে পুষ্টিকর খাবার। করোনা-পর্বের আগে ওই কেন্দ্রগুলিতে শিশুদের সোম, বুধ ও শুক্রবার আধখানা করে ডিম দেওয়া হত। মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনিবার দেওয়া হত গোটা ডিম। মহিলাদের অবশ্য সপ্তাহের ছ’দিনই গোটা ডিম দেওয়া হত। এখন শিশুদের ছ’দিনই গোটা ডিম দেওয়া হয়।
সোম, বুধ ও শুক্রবার শিশু এবং মহিলাদের সবাইকে দেওয়া হয় ভাত এবং ডিম-আলুর ঝোল। মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনিবার দেওয়া হয় ডিমসেদ্ধ, খিচুড়ি, সয়াবিনের তরকারি এবং আনাজ। চালের জোগান দেয় সরকার। ডিম, সয়াবিন এবং আনাজ কর্মীদের বাজার থেকে কিনতে হয়। সেটা কিনতে গিয়েই দেখা দিয়েছে সমস্যা।
অঙ্গনওয়াড়ির কর্মীরা জানান, একটা সময়ে নিয়ম ছিল, তাঁরা বাজারের হিসাব দিলে প্রতি মাসে টাকা এসে যেত। কিন্তু দু’মাস ধরে টাকা আসছে না। এই ছবি জেলার প্রায় সর্বত্র। তবে, জেলার কোথাও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ডিম এবং আনাজের জোগান বন্ধ হয়নি বলে প্রশাসনের দাবি। জেলা পরিষদের নারী ও শিশু সংক্রান্ত কর্মাধ্যক্ষ আম্বিয়া খাতুন বলেন, ‘‘আমরা কেন্দ্রগুলিতে নিয়মিত পরিদর্শন করি। কোথাও খাবারের ঘাটতির অভিযোগ পাইনি।’’
বেশিরভার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির কর্মীরা জানিয়েছেন, নিয়মিত পরিদর্শন এবং অভিভাবকদের চাপে পড়ে তাঁরা খাবারের ঘাটতি মেটাতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। যে সব দোকানি ধার দিতে চাইছেন না, প্রয়োজনে ব্যক্তিগত ভাবে ঋণ নিয়েও তাঁরা দোকানির বকেয়া মিটিয়ে কেন্দ্রে খাবারের জোগান বজায় রেখেছেন বলে অনেক কর্মী জানিয়েছেন।
টাকা না-আসায় যে সমস্যা হচ্ছে, সে কথা স্বীকার করেছেন জেলার একাধিক ব্লকের নারী ও শিশুকল্যাণ আধিকারিক। এক ব্লক অধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা টাকা চেয়ে বার বার দফতরে চিঠি লিখছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy