Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Cyclone Yaas

ত্রিপল ‘চুরি’, সোহরাবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি নিয়ে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দ্বারস্থ হলেন তৃণমূলের আরামবাগ ব্লক নেতৃত্ব।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২১ ০৫:২১
Share: Save:

সরকারি ত্রাণের ত্রিপল চুরিতে অভিযুক্ত আরামবাগের আরান্ডি-১ পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের সোহরাব হোসেন। তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি নিয়ে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দ্বারস্থ হলেন তৃণমূলের আরামবাগ ব্লক নেতৃত্ব।

রবিবারই তৃণমূলের ব্লক সভাপতি পলাশ রায় দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে ওই সুপারিশ করেছেন। পলাশ বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ দলকে পরিচ্ছন্ন দেখবেন আশা করে ফের আমাদের রাজ্যে ক্ষমতায় এনেছেন। এ কথা মাথায় রেখে আমাদের স্তর থেকে নেতৃত্বের কাছে সোহবারের বিরুদ্ধে ওই দাবি করা হয়েছে।’’

তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “পুরো বিষয়টা রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি। রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তমতোই পদক্ষেপ করা হবে।” সোহরাব অবশ্য দাবি করেছেন, “দুর্নীতির কোনও প্রমাণ মিলবে না।”

গত বছর আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরিতে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ এবং বেআইনি ভাবে গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল সোহরাবের বিরুদ্ধে। দল তাঁকে শুধুমাত্র শোকজ় করে। এ বার সোহরাবের বিরুদ্ধে ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রিপল চুরির অভিযোগ নিয়ে ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যদেরই একাংশ। ত্রিপল না-পেয়ে ইতিমধ্যে পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তেরা।

ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, আজ, সোমবার ওই পঞ্চায়েতে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করা হবে। তবে, দল শেষ পর্যন্ত কী ব্যবস্থা নেয়, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের একাংশ। ‘বিদ্রোহী’ পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে শ্রীকান্ত ঘোষ এবং শেখ আসরাফুল বলেন, ‘‘গত বার জেলা নেতৃত্ব নাম-কা-ওয়াস্তে শো-কজ় করেছিলেন। এ বার গ্রামবাসীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভের কথা মাথায় রেখে আমরা চাই, সোহরাবকে প্রধান পদ থেকে সরিয়ে দল থেকেই বহিষ্কার করা হোক।”

সোহরাবের বিরুদ্ধে আবাসন প্রকল্প-সহ সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণে উপভোক্তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া এবং দুর্নীতির অনেক অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় স্তরে। কোনওটিরই নিষ্পত্তি হয়নি। আরামবাগ ব্লকের এক এক্সটেনশন অফিসার বলেন, “তদন্তে গিয়ে হুমকির মুখে পড়ে পালিয়ে আসতে হয়। গাছে বেঁধে রাখারও হুমকি দেওয়া হয়েছে।”

শুধু সরকারি প্রকল্পেই নয়, সোহরাবের বিরুদ্ধে তোলাবাজি, হুমকি দেওয়া, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখানো, মারধর, জমি দখল, টাকা আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে থানায়। সোহরাবের নিজের হিসাবে, ‘‘বাম আমল থেকে ৪০টিরও বেশি মামলা হয়েছে আমার নামে। তিন-চারটি ছাড়া সব ক’টির নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনও প্রমাণ কেউ দাখিল করতে পারেননি।”

স্থানীয় এবং তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোহরাব আগে দর্জির কাজ করতেন। সাতমাসা এলাকায় পৈতৃক একচিলতে বাড়ি ছিল। রাজ্যে তৃণমূল জমানার প্রথম দফায় সোহরাবের প্রথম স্ত্রী পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন। দ্বিতীয় দফায় সোহরাব প্রধান হন। তারপর দর্জির কাজ ছেড়ে দেন। প্রধানের কাজ ছাড়া আর কিছু করেন না। এই সময়েই সাতমাসায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রাসাদোপম বাড়ি বানান।

স্থানীয় লোকজন এবং তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের দাবি, বর্তমানে সোহরাব ১২ বিঘারও বেশি জমির মালিক। তাঁর তিনটি মিনি ডিপটিউবওয়েল, একটি গাড়ি, একটি ট্রাক্টর, একাধিক মোটরবাইক এবং পুরা বাজারে দোকানঘরও রয়েছে। পুরাতেই তৃতীয় স্ত্রীর জন্য বাড়ি তৈরি করাচ্ছেন। এ ছাড়াও আরও সম্পত্তি রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Cyclone Yaas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy