—প্রতীকী ছবি।
বাড়ি থেকে প্রায় এক কিমি দূরে, একটি ডোবার ধার থেকে মঙ্গলবার সকালে হুগলির পোলবার ঝাঁপা গ্রামের এক বালকের গলার নলিকাটা দেহ উদ্ধার হয়েছিল। দেব ঘোষ নামে ১১ বছরের ওই বালককে খুনের অভিযোগে এলাকায় প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপ বসানোর কাজে আসা এক শ্রমিককে মঙ্গলবার রাতেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ধৃত সুব্রত সরকারের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরের দেওড়া গ্রামে। সে খুনের কথা কবুল করেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। বুধবার চুঁচুড়া আদালতে পেশ করা হলে ধৃতকে সাত দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তদন্তকারীদের অনুমান, সুব্রতর সঙ্গে কোনও মহিলার ঘনিষ্ঠতা দেখে ফেলাতেই দেবকে খুন করা হয়।
ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত ছিল কি না, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে জানিয়ে হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুননির্র্মাণ করা হবে। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাইপ লাইনের কাজের জনা দশেক শ্রমিক দিল্লি রোডের ধারে দেবদের বাড়ির কাছেই টিনের অস্থায়ী ঘর করে থাকছিলেন। সেই দলেই ছিল সুব্রত। সে এখানে আসে দিন পনেরো আগে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবের বাবা গত সাত বছর ধরে অন্যত্র থাকেন। ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া দেব পড়াশোনায় ভাল ছিল। দিন চারেক ধরে সে পাইপ লাইনের কাজের শ্রমিকদের স্নান এবং খাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বালতি করে জল বয়ে দিচ্ছিল। ওই কাজ বাবদ শ্রমিকেরা তাকে টাকা দিয়েছিলেন। আরও দু’শো টাকা দেওয়ার কথা ছিল।
নিহতের মা মামণি ঘোষ জানান, সোমবার সন্ধ্যায় দেব তাঁর থেকে ২০ টাকা নিয়ে চাউমিন কিনতে যায়। সেই সঙ্গে শ্রমিকদের কাছে পাওনা ২০০ টাকাও নিয়ে আসবে বলেছিল। কিন্তু আর সে ফেরেনি।
মঙ্গলবার সকালে দেবের দেহ উদ্ধার হতেই পাইপ লাইনের শ্রমিকদের কেউ খুনে জড়িত সন্দেহে তাঁদের অস্থায়ী ঘর ভাঙচুর করে এলাকাবাসী। পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়। সুব্রত-সহ তিন জনকে আটক করা হয়। থানায় খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মামণি। জিজ্ঞাসাবাদের পরে সুব্রতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্য দু’জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
নিহতের দাদু দীনেশ পাসোয়ান বলেন, ‘‘নাতির খুনির চরমতম শাস্তি চাই।’’ পেশায় দিনমজুর মামণি বলেন, ‘‘আমাদের অভাবের সংসার। ছেলে সবার সঙ্গে মিশত। খুব চনমনে ছিল। যে ওকে মেরেছে, তার উপযুক্ত বিচার চাই।’’
বুধবার সকালে নিহতের বাড়িতে যান স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। পরে হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ও যান। দু’জনেই পরিবারের লোকজনকে সমবেদনা জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy