হাওড়া পুরসভা বুধবারই ঘোষণা করেছিল, দু’দিনের মধ্যেই বেলগাছিয়া ভাগাড়ের ধসে ভেঙে পড়া নিকাশির মাইক্রো টানেলিং করে পাইপ বসানোর কাজ শুরু করবে কেএমডিএ। কিন্তু পুরসভার সেই ঘোষণা সত্ত্বেও ফের বৃহস্পতিবার দুপুরে বেনারস রোডের বামনগাছি মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। দু’ঘণ্টা ধরে চলা সেই অবরোধ তুলতে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে পুলিশের। পরে পুলিশের পদস্থ কর্তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
দিন পনেরো আগে বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ধসের জেরে এলাকার প্রধান নিকাশি নালাটি ভেঙে পড়ে। যার ফলে নিকাশি ব্যবস্থা পুরোপুরি রুদ্ধ হয়ে যায় হাওড়া পুরসভার ৭, ৮ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। নর্দমার জলের সঙ্গে পুরসভার পাইপলাইনের জল মিশে গিয়ে এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। গত মঙ্গলবার জমা জল সরানোর দাবিতে ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা দীর্ঘক্ষণ এলাকার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পরের দিনই কেএমডিএ-র পদস্থ আধিকারিক ও পুর আধিকারিকেরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বি রোড থেকে ভাগাড়ে থাকা একটি জলাধার পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ নিকাশি পাইপলাইন বসানোর সিদ্ধান্ত নেন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এর মধ্যে বি রোডে একটি নালা কেটে জমে থাকা জল বার করে দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও বামনগাছি এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জমা জল বার করা হয়নি।
এ দিন দুপুরে ওই এলাকার ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা বামনগাছি মোড়ে অবরোধ শুরু করেন। অবরোধকারীদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যাই ছিল বেশি। তাঁরা অবিলম্বে জমা জল সরানোর দাবিতে রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশ বাহিনী এসে তাঁদের সরানোর চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তি বেধে যায়।
অবরোধকারীদের মধ্যে শিবপ্রসাদ চন্দ্র বলেন, ‘‘শুধু ভাগাড়ের ধসের জন্য নয়, এখানে বর্ষার সময়ে বা বর্ষা না থাকলেও খাল, নর্দমার পচা জলের মধ্যে বাস করি। এর কোনও প্রতিকার নেই। এ ছাড়া, মশার উপদ্রব যে ভাবে বেড়েছে, তাতে যে কোনও সময়ে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি মহামারির আকার নিতে পারে।’’
প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে ওই অবরোধ চলার পরে হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তারা এসে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেন। এ দিনের অবরোধ প্রসঙ্গে হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা বি রোডের জল ইতিমধ্যে নামিয়ে দিয়েছি। কেএমডিএ আগামী কাল থেকে কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছে। দিন চারেকের মধ্যে সি রোড ও বামনগাছির জলও নেমে যাবে। তবে পাইপলাইন বসানোর জন্য তো একটু সময় দিতে হবে!’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)