বেআইনি ভাবে রূপনারায়ণ নদ থেকে খাঁড়ি কেটে শ্যামপুরের আমবেড়িয়া গ্রামে একটি জাহাজ মেরামতির কারখানা তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ইতিমধ্যেই সেখানে একটি বিলাসবহুল ক্রুজ আনা হয়েছে। এ সব দেখে গ্রামবাসীরা প্রশাসনের নানা মহলের দ্বারস্থ হয়েছেন। বিষয়টি সামনে আসায় শুক্রবার সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার তোপের মুখে পড়েন বলে খবর। পরে তিনি জানান, শ্যামপুরে ওই খাঁড়ি কাটার ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আপাতত কারখানা তৈরির কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহকুমাশাসক (উলুবেড়িয়া) মানসকুমার মণ্ডল।
দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে এ দিন সেচমন্ত্রী সল্টলেকের সেচ ভবনে জরুরি ভিত্তিকে বৈঠক করেন। কী করে এমনটা ঘটেছে তা হাওড়ার ইঞ্জিনিয়ারদের থেকে সেচমন্ত্রী জানতে চান। পরে তিনি বলেন, ‘‘দফতরের উচ্চপদস্থ ইঞ্জিনিয়ারেরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন। প্রয়োজনে তাঁরা জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গেও কথা বলবেন। একইসঙ্গে আমাকেও রিপোর্ট জমা দেবেন। তার পরে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, যে ভাবে খাঁড়ি কাটা হয়েছে, তাতে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারখানাটি গড়ছেন স্থানীয় ইটভাটা মালিক শেখ রাসিদুল। প্রশাসনের কোনও তরফ থেকেই কারখানা গড়ার অনুমতি দেওয়ার কথা মানা হয়নি। খাঁড়ি কাটার অভিযোগ উড়িয়ে রাসিদুলের দাবি, ‘‘সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে প্রকল্পটি করছি নিজের ভাটারই জমিতে।’’
এ দিন ওই এলাকাটি পরিদর্শনে যান শ্যামপুর ২-এর বিডিও, ব্লক ভূমি ও সেচ দফতরের আধিকারিকেরা। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘বিডিও, ব্লক ভূমি ও সেচ দফতরকে বলা হয়েছে সরেজমিন পরিদর্শন করে সব রকম কাগজপত্র খতিয়ে দেখতে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এলাকাটি শ্যামপুর ২ ব্লকের ডিহিমণ্ডলঘাট ১ নম্বর পঞ্চায়েতের অধীন। উপপ্রধান সুদীপ বেরা বলেন, "পঞ্চায়েতের কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি।’’ শ্যামপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি নদেবাসী জানাও বলেন, "বিষয়টি আমাদের জানা নেই। আমরা ভূমি দফতরকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’
সেচ দফতরের নিম্ন দামোদর নির্মাণভুক্তি (১) বিভাগের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, নদীর পারে বা তীরে কিছু করতে গেলে সেচ দফতরের অনুমতি নিতে হয়। এই ধরনের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)