চলন্ত ট্রেনের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন। থুতু ফেলার জন্য মুখ বাড়িয়েছিলেন বাইরে। ঠিক তখনই সিগন্যাল পোস্টে ধাক্কা খেয়ে ঠিকরে ট্রেনের মধ্যে পড়লেন এক যাত্রী। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে। শুক্রবার হুগলির চন্দননেগর স্টেশন থেকে জখম ওই যাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। বর্তমানে তিনি চন্দনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, যুবকের শারীরিক পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক।
জানা গিয়েছে, আহত ট্রেনযাত্রীর নাম সেজাবুর রহমান। বয়স ১৮ বছর। শুক্রবার মাতৃভূমি লোকাল ট্রেনে চেপে উত্তরপাড়া থেকে চুঁচুড়া যাচ্ছিলেন সায়ন্ত সরকার নামে এক যুবক। দুর্ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী ওই যুবক জানান, ট্রেনের দরজার কাছে দাঁড়িয়েছিলেন সেজাবুর। হঠাৎ দরজা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে থুতু ফেলতে যান। ঠিক তখনই একটি সিগন্যাল পোস্টে বাড়ি খান। সেকেন্ডের মধ্যে ছিটকে পড়েন ট্রেনের মধ্যে। মাথা ফেটে রক্ত বেরোতে থাকে তাঁর। শরীরের নানা জায়গায় আঘাত লাগে। ঘটনার আকস্মিকতায় চমকে যান সহযাত্রীরা। তাঁরা উদ্ধার করতে গিয়ে দেখেন সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছেন ওই যুবক।
ওই অবস্থাতেই সেজাবুরকে উদ্ধার করে চন্দননগর স্টেশনে নামান সায়ন্তন। কয়েক জন পরিচিতকে ফোন করে ডেকে চন্দননগর স্টেশন থেকে টোটো করে আহত যাত্রীকে চন্দনগর হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি। জানা যাচ্ছে, জখম ওই যাত্রীর মাথায় সাতটি সেলাই পড়েছে। সায়ন্তনের কথায়, ‘‘আমরা ট্রেনের ভেতরে দাঁড়িয়েছিলাম। গেটের বাইরে ওই যাত্রী থুতু ফেলতে যান। হঠাৎ করে একটা শব্দ হল। দেখলাম ছিটকে ট্রেনের ভেতরেই পড়ে গেলেন যুবক। পা দুটো বাইরে ছিল। আমরা তাঁকে ট্রেনের ভিতরে ঢোকালাম। রাত ৮টা নাগাদ চন্দননগর স্টেশনে ঢোকার সময় এই দুর্ঘটনা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, জখম যাত্রীর বাড়ি মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার মহুরুল অনন্তপুরে। কাজের সূত্রে তিন দিন আগে কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। এক পরিচিতর সঙ্গে বীরশিবপুরে রাজমিস্ত্রির কাজ করছিলেন। শুক্রবার বাড়ি ফেরার জন্য হাওড়া থেকে ব্যান্ডেলগামী মাতৃভূমি লোকালে উঠেছিলেন সেজাবুর। ব্যান্ডেলে নেমে কাটোয়া লোকালে কাটোয়া যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। তার পর সেখান থেকে খাগড়াঘাট হয়ে বাড়ি পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু মানকুণ্ডু থেকে চন্দননগর স্টেশনে ঢোকার আগে ওই দুর্ঘটনা হয়। সেজাবুরের বাড়িতে খবর পাঠানো হয়েছে।