উত্তরপ্রদেশের সরকারি ওয়েবসাইট ব্য়বহার করে জালিয়াতি হত বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
নকল নথি বানিয়ে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি চক্রের হদিশ পেল চুঁচুড়া থানার পুলিশ। একটি বাড়িতে হানা দিয়ে পুলিশ উত্তরপ্রদেশের চার বাসিন্দাকে গ্রেফতার করেছে। প্রদীপ সাহানি, সদানন্দ শ্রীবাস্তব ওরফে মনু, মনোজ কুমার এবং শিবম গুপ্ত নামে ওই চার ব্যক্তি গোরক্ষপুর ও কুশীনগর জেলার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।
গোপন সূত্রে চুঁচুড়া থানার পুলিশ খবর পায়, এলাকায় সম্প্রতি চার ব্যক্তি একটি বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকছেন। তাঁদের আচরণ সন্দেহজনক বলে জানান স্থানীয়রা। সারাদিন নাকি ঘর থেকে বেরোতেন না তাঁরা। দেখা যেত রাতে। প্রায়শই তাঁরা ব্যান্ডেল চার্চ সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন এটিএম থেকে টাকা তুলতেন বলে খবর পায় পুলিশ। রবিবার সকালে পুলিশ ওই বাড়িতে তল্লাশি চালায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের সরকারের জমি বাড়ি বিক্রির নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট রয়েছে। সেখানে গ্রাহকরা জমি বেচাকেনার জন্য নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে থাকেন। প্রতারকরা ওই ওয়েবসাইট থেকে গ্রাহকের প্যান নম্বর, আধার কার্ডের নম্বর, আঙুলের ছাপ ইত্যাদি সংগ্রহ করত। তার পর সেগুলিকে ফটোশপের মাধ্যমে নকল করে ‘পে ওয়ার্ল্ড’ নামে একটি অ্যাপে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরি করত। সেখান থেকে হয়ে যেত সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ।
পুলিশ সূত্রে খবর, একজন গ্রাহকের কতগুলি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে, তাতে কত টাকা আছে, এ সবও তথ্য ওই প্রতারকদের হাতে চলে আসত। এমনকি মৃত ব্যক্তির নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট করেও চলত এই প্রতারণা।
নানা ভাবে চলত জমি-বাড়ি বিক্রির নথিপত্র সংগ্রহের চেষ্টা। সে সব না হলে সোজা হানা দিতেন নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে। সেখান থেকে নকল করা হত জমির দলিলে থাকা মালিকের আঙুলের ছাপ। তার পর তৈরি হত নকল অ্যাকাউন্ট। উধাও হয়ে যেত টাকা। গ্রাহক বুঝতেই পারতেন না কী ভাবে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে টাকা! শেষমেশ উত্তরপ্রদেশেরএই ব্যাংক প্রতারণা চক্রের একটি দল ধরা পড়ল হুগলির চুঁচুড়া থানার পুলিশের হাতে।
তারক বিশ্বাস নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, গত ১০ ফেব্রুয়ারি ব্যান্ডেল ডন বসকো স্কুলের বিপরীতে একটি বাড়ি ভাড়া নেন তাঁরা। বাড়িমালিককে ব্যবসায়ী পরিচয় দেন চারজন। জানিয়েছিলেন,অনলাইন ব্যবসা করেন তাঁরা।
রবিবার ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ নগদ টাকা, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ছাড়াও প্রচুর মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি এবং দলিলের তথ্য পায়। তা ছাড়া বেশ কিছু নকল পরিচয়পত্র, নকল আঙুলের ছাপের রবার সিলমোহর, এটিএম কার্ড, পাশবই উদ্ধার হয়। গত কয়েকদিনে চার লাখ টাকা প্রতারণায় যুক্ত এই অভিযুক্তরা বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিমবঙ্গে সক্রিয় হয়েছে এই প্রতারণা চক্র। ধৃতদের ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে চুঁচুড়া আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy