Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Anubrata Mondal

অনুব্রতের সম্পত্তির ‘রহস্যভেদে’ ভরসা ব্যাঙ্ককর্মীদের বয়ান

চার্জশিটে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮-র গোড়া থেকে অনুব্রতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফুলেফেঁপে উঠেছে। সিবিআই সূত্রের দাবি, অনুব্রত তাঁদের কাছে যুক্তি দিয়েছেন, চালকল ও তাঁর সংস্থায় ক্রমশ লাভ বেড়েছে।

অনুব্রত মণ্ডল।

অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৩৭
Share: Save:

গত চার বছরে না কি তাঁর সম্পত্তি তরতরিয়ে বেড়েছে। করোনা-কালে যেখানে অর্থনীতিতে ভাটা পড়েছে, সেখানে বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের ব্যবসাপত্রে এত লেনদেন বাড়ল কী করে, প্রশ্ন তুলেছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। আয়ের সঙ্গে ‘সঙ্গতিহীন’ সম্পত্তি এবং ব্যাঙ্কে জমানো বিপুল টাকার মূল উৎস গরু পাচারের অর্থ কি না, তার খোঁজে নেমে এখন সিবিআইয়ের ভরসা কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি ব্যাঙ্কের বেশ কিছুর আধিকারিকের সাক্ষ্য। অনুব্রতের বিরুদ্ধে চার্জশিটে যে ৯৫ জন সাক্ষীর কথা জানানো হয়েছে, তার একটি বড় অংশ ব্যাঙ্কের কর্মী-আধিকারিকেরা।

সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়ে সুকন্যা, প্রয়াত স্ত্রী ছবি-সহ অনুব্রত ওরফে কেষ্টর ‘ঘনিষ্ঠ’ কিছু লোকজনের নামে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের সিউড়ি, বোলপুর, কলকাতার সল্টলেক এবং বাগমারি শাখায় গোটা তেরোটি অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে। ১১ অগস্ট অনুব্রতকে গ্রেফতারের পরে সব ক’টি অ্যাকাউন্টের লেনদেন বন্ধ করা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, ব্যাঙ্কের কর্মী-কর্তাদের বয়ান থেকে মূলত তিনটি বিষয় জানা গিয়েছে। প্রথমত, প্রতিটি অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতেন অনুব্রত নিজে। দ্বিতীয়ত, অ্যাকাউন্টে লেনদেনের বিশদ তথ্য এবং তৃতীয়ত, অনুব্রতের ‘নিয়ন্ত্রণে’ থাকা দু’টি চালকল এবং তিনটি ‘ভুয়ো’ সংস্থার লেনদেনের তথ্য।

চার্জশিটে দাবি, ১৩টি অ্যাকাউন্টের মধ্যে রয়েছে ওই চালকল এবং সংস্থাগুলির অ্যাকাউন্টও। সেখানে কোটি-কোটি টাকার লেনদেন দেখা যাচ্ছে বলেও দাবি করা হয়েছে চার্জশিটে। উদাহরণ হিসাবে চার্জশিটে বলা হয়েছে, এক বেসরকারি ব্যাঙ্কের বোলপুরের শাখায় কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ এক জনের অ্যাকাউন্টে ২০১১ থেকে ২০২২-এর মধ্যে ১০৫ বারে এক কোটিরও বেশি টাকা জমা পড়েছে। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের সিউড়ির শাখায় একটি চালকলের অ্যাকাউন্টে ৬৬ বারে প্রায় এক কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা, ওই ব্যাঙ্কের বোলপুর শাখায় ওই চালকলেরই অ্যাকাউন্টে ২৪ বারে প্রায় এক কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা, আবার একটি ‘ভুয়ো’ সংস্থার অ্যাকাউন্টে ৭৮ বারে প্রায় এক কোটি ২৫ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে।

চার্জশিটে দাবি, মূলত গরু পাচারের ‘মাথা’ এনামুল হকের কাছে পাওয়া টাকা সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টগুলিতে জমা পড়েছে। ব্যাঙ্কের ওই সব শাখায় কর্মরত অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ কিছু কর্মী-আধিকারিক ‘উদ্যোগী’ হয়ে লেনদেনের কাজ করে দিতেন। তাঁদের সাক্ষ্য মামলায় গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে সিবিআইয়ের আশা।

চার্জশিটে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮-র গোড়া থেকে অনুব্রতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফুলেফেঁপে উঠেছে। সিবিআই সূত্রের দাবি, অনুব্রত তাঁদের কাছে যুক্তি দিয়েছেন, চালকল ও তাঁর সংস্থায় ক্রমশ লাভ বেড়েছে। কিন্তু তদন্তকারীদের প্রশ্ন, এই সময়ের একটা বড় অংশ জুড়ে করোনা চলেছে, যাতে বিশ্ব জুড়ে অর্থনীতি ধাক্কা খেয়েছে, সেখানে অনুব্রতের ব্যবসায় লাভ বাড়ল কোন কৌশলে? গত চার বছরে চালকল দু’টির উৎপাদন কী ছিল, তা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পর্যবেক্ষণ করানো হচ্ছে বলেও জানান তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Anubrata Mondal TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy